পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির পরিমাণ এতটাই যে বৃদ্ধি পেয়েছে যা কল্পনার বাহিরে। বিভিন্ন তথ্য সূত্র বিশ্লেষণ করে জানা যায় বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা সমপরিমাণ চাঁদা উত্তোলন করা হয়। এই চাঁদাবাজির অর্থের ৩০% ইউপিডিএফ-জেএসএসের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের হাতে চলে যায়৷ অবশিষ্ট টাকা দিয়ে তাদের বেতন-ভাতা ও অস্ত্র ক্রয়, প্রশিক্ষণ, এবং দেশবিরোধী অপশক্তিকে ভরণপোষণ করা হয়। পরিতাপের বিষয় যে, উপজাতি সন্ত্রাসীরা জাতির অধিকারের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে চাঁদা উত্তোলন করে। সেই চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে নিজেরা বিলাসবহুল জীবনযাপন করে। সাধারণ মানুষ তাদের চাহিদা মত চাঁদা পরিশোধ করতে নাভিশ্বাস।
চাঁদাবাজির প্রধান উৎসগুলো হল-
১. গাছ
২. বাঁশ
৩. আদা
৪. হলুদ
৫. জুম চাষ
৬. কাঠাল, আনারস, আম, লিচুসহ পাহাড়ি ফলমূল।
৭. হাঁস- মুরগী
৮. গরু-ছাগল
৯. জায়গা ক্রয়-বিক্রয়
১০. যানবাহন
১১. ঠিকাদার
১২. ব্যবসা-বাণিজ্য।
১৩. সরকারি বরাদ্দকৃত প্রকল্প
১৪. সরকারি চাকরিজীবি
১৫. সাধারণ জনগন থেকে গণচাঁদা এছাড়াও পাহাড়ের প্রতিটি নাগরিক ইউপিডিএফ-জেএসএস’কে মোটা অংকের চাঁদা দিতে বাধ্য হয়। এই চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি থেকে পরিত্রাণের বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই পার্বত্যবাসীর।
প্রশ্ন আসতে পারে পাহাড়ে প্রশাসন কী করে?
বাস্তবতার নিরিখে বলতে গেলে পাহাড়ে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নামেমাত্র আছে। এখানে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বদা নীরবতা পালন করতে দেখা যায়। নানান চাপের কারণে তারা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনা। আরো একটি বড় কারণ হলো উপজাতি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাস্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়না মূলত আন্তর্জাতিক মহলের চাপের কারণে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উপজাতি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পার্বত্য ভূখণ্ডকে নিজেদের নিরাপদ স্বর্গরাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
উপজাতি সন্ত্রাসীদের শক্তির মূল উৎস কোথায়?
শক্তির উৎস খুঁজতে গিয়ে গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্য মতে জানা যায়, প্রতিবেশী রাস্ট্রগুলো পার্বত্য উপজাতি সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ, অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে প্রতিবেশী রাস্ট্র বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করার অংশ হিসেবে উগ্রবাদী উপজাতীয় একটি অংশকে অস্ত্র দিয়ে লেলিয়ে দিয়েছে। যার উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, প্রতিবেশী দেশের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর সীমান্তে কাঁটা তাঁরের বেড়া না থাকা; প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী অবাধে সীমান্তে উপজাতি সন্ত্রাসীদের অস্ত্র পারাপারে সহযোগিতা করে আসছে; তাদের মাটিতে জেএসএস-ইউপিডিএফকে ঘাঁটি করতে দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য সীমান্তে বিএসএফ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও গরু চোরাকারবারি ঠেকাতে পশুর মত গুলি করে মানুষ হত্যা করলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলার সীমান্তে কখনো তাদেরকে গুলি ছুঁড়েনি দেখা যায়না! মূলত সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসা যাওয়া বন্ধে সীমান্তে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়নি। এই থেকে প্রতিয়মান হয় যে, প্রতিবেশী রাস্ট্র বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে এবং এদেশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে।