একই স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করার পরও পাহাড়ী শিক্ষার্থীরা বাঙ্গালী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক ও সাম্প্রদায়িক আচরণ করে। ঠুনকো অজুহাতে পাহাড়ি ছাত্ররা বাঙ্গালী ছাত্রদের উপর হামলা করে। সবকিছুতে পাহাড়ী-বাঙ্গালী জাতপাত হিসাব বিবেচনা করে! আমরা অনেক স্কুল-কলেজে দেখছি বাঙ্গালী শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মিথ্যে অভিযোগের ধুয়া তুলে বহিষ্কার করে। তারই পুনরাবৃত্তি ঘটে গত বুধবার ১৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে একটি ঘটনায় সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করে শিক্ষক রাকিবকে অভিযুক্ত করা মধ্য দিয়ে। শিক্ষক রাকিবের অপরাধ ছিল পাহাড়ী ও বাঙালি শিক্ষার্থীর মধ্যকার সংঘর্ষের একটি দ্বন্দ্ব নিরসনে এগিয়ে আসা। এতে শিক্ষক রাকিব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উভয়কে শাসনের সুরে প্রথমে বাঙালি ছাত্রকে তারপর পাহাড়ী ছাত্রকে হালকা বেত্রাঘাত করেন। এটিকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার জন্য সন্ত্রাসী সংগঠন তৎপর থাকে। পরবর্তীতে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ পর্যন্ত গড়ালে অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টির সমাধান করে দেওয়া হয়। বিষয়টি এখানে শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু পরবর্তীতে শোনা যায়, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের কিছু শিক্ষার্থী প্রায় ৩০/৩৫ জন ছাত্র যারা উগ্রবাদী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন (ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ)-এর ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারা হঠাৎ এসে বাঙালি ছাত্রের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ফলে আবার নতুন করে ঝামেলার সুত্রপাত ঘটে। ফলে বাঙালি ছাত্ররা গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ইউপিডিএফ এর ইন্ধনে পাহাড়ি ছাত্ররা শিক্ষক রাকিবকে স্থায়ী বহিষ্কার করার আন্দোলন করছে। এদিকে বহিষ্কার আদেশ বাতিল করে শিক্ষক রাকিবকে পুনঃবহাল করার জন্য বাঙ্গালী ছাত্র-ছাত্রীরা অদ্য ৩১ জুলাই ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ শুরু করে খাগড়াছড়ি মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ করে।
ইউপিডিএফ ও তার ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এর চাপের মুখে বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রশাসনিকভাবে সমাধা করার প্রেক্ষিতে শিক্ষক রাকিবকে বহিষ্কার করার হয়। এটা অত্যান্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয় বটে৷ প্রশাসন যদি সন্ত্রাসী সংগঠনের চাপে অন্যায়ভাবে শিক্ষককে বরখাস্ত করে তা কী সকলেই মেনে নিবে? একজন শিক্ষক তার সঠিক দায়িত্ব পালন করেছে, শিক্ষক যদি এই ভূমিকা পালন না করতেন তাহলে পাহাড়ী-বাঙ্গালি বড়ধরণের দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি হতো। এখানে শিক্ষকের ভূমিকার জন্য তাকে পুরস্কৃত কিংবা বাহবা দেয়া প্রয়োজন ছিল কিন্তু তা না করে তাকে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এটা কোন দেশের রীতি?
এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এই ঘটনাকে এড়িয়ে গেলে কিংবা এই বিষয়ে চুপ থাকে হবেনা। স্কুল- কলেজে সন্ত্রাসী সংগঠনের দাপট থাকতে পারেনা। আর সন্ত্রাসী সংগঠনের দাপটে নতজানু হয়ে একজন সৎ চরিত্রের আর্দশবান শিক্ষককে বরখাস্ত করবে তা সচেতন মহল এবং শিক্ষার্থীরা মেনে নিবেনা।