তিন এমপি উপজাতি; সংরক্ষিত এমপি বাঙ্গালী না হলে পার্বত্য সমস্যা ঘনীভূত হবে।

0

এমপি উপজাতি; সংরক্ষিত নারী এমপি বাঙ্গালী না হলে পার্বত্য সমস্যা ঘনীভূত হবে।

খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান বিশাল আয়তনের এই তিন জেলায় জনসংখ্যা অনুপাতে তিনটি সংসদীয় আসন। রাজনৈতিক দলগুলো বরাবরই তিন পার্বত্য জেলা তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম মনোনয়নে দৌড়ে উপজাতি সম্প্রদায়কে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তিনজন এমপি উপজাতি হওয়াতে এখানকার পিছিয়েপড়া হতদরিদ্র বাঙ্গালীদের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। সেসাথে দিনদিন পার্বত্য চট্টগ্রাম রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাচ্ছে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আধিপত্য সবকিছুতে একচেটিয়া উপজাতিদের অগ্রাধিকার থাকাতে বাঙ্গালীরা এখানে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের পরিণত হয়েছে। তাই ভারসাম্য রক্ষার জন্য হলেও পার্বত্য সংরক্ষিত আসনে একজন বাঙ্গালী নারী এমপি মনোনীত করার দাবি জোরালো হচ্ছে।

দাবি জোরালো হওয়ার অন্যতম কারণ-

পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবাদ, হানাহানি, জাতিগত ভেদাভেদ এবং চাঁদাবাজি ও খুন-গুম বেড়ে চলছে। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিও বাড়ছে। একতরফাভাবে উপজাতি সম্প্রদায় হইতে সংসদে যাওয়া এমপিরা কখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করেনি। তারা কখনো পাহাড়ে পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয় সম্প্রদায় মধ্যে সহাবস্থান তৈরি করতে পারেনি। এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি আসন নিয়ে একটি সংরক্ষিত নারী আসন। সংরক্ষিত আসনের একজন নারী এমপি সহসাই চুড়ান্ত করবে সরকার। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি খাগড়াছড়ির উগ্র সাম্প্রদায়িক নারী নেত্রী বাসন্তী চাকমাকে করা হলে তিনি সংসদে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয় এমন উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য প্রদান করে। তার এই বক্তব্য ছিল উগ্র মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ এবং লৌহগাং গণহত্যা নিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্লজ্জ মিথ্যাচার। বাসন্তী চাকমা সংসদে দাঁড়িয়ে সেই ভাষণে ৩৮ হাজার বাঙ্গালী খুনি তথা সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীকে তার ‘ভাই’ হিসেবে সম্বোধন করেছে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করেছে। তার এই বক্তব্য বা ভাষণ ছিল সম্পূর্ণ জাতিবিদ্বেষী এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনী বিদ্বেষী। তাই আমরা আশঙ্কা করছি দ্বাদশ জাতীয় সংসদে হয়তো বাসন্তীর কোন উত্তরসূরী আবির্ভাব ঘটবে।

স্থানীয় অধিবাসীরা বলছে- গত ২০১৮ সালে খাগড়াছড়ি থেকে এমপি দিলেও এবার প্রতিযোগীতায় রয়েছে বান্দরবান এবং রাঙ্গামাটি। ইতোমধ্যে গোপন সূত্রের খবরে জানা গেছে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি থেকে নারী এমপি মনোনীত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে৷ উপজাতীয়দের মধ্য থেকেই সংরক্ষিত নারী এমপি মনোনীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর ফলে পার্বত্য সমস্যা ঘনীভুত হওয়ার পথে আরো এগিয়ে গেল। এর থেকে পরিত্রাণের প্রধানপথ বাঙ্গালী নারী ফিরোজ বেগম চিনু বা অন্য কোন অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালী নারীকে মনোনীত করা।

জানা প্রয়োজন কে এই ফিরোজ বেগম চিনু?

দশম সংসদে রাঙ্গামাটি থেকে বাঙ্গালী নারী ফিরোজ বেগম চিনু সংরক্ষিত নারী এমপি হিসেবে মনোনীত হয়েছিলো৷ বাঙ্গালী এমপি হিসেবে তিনি সংসদে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানির বিরুদ্ধে কথা বলেন। এই অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসন তথা সরকারের নিকট দাবি জানান তিনি৷ যা ছিলো পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের পক্ষে প্রথম সংসদে দাঁড়িয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বরে কথা বলা। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী এবং বিভিন্ন মহল কোণঠাসা করে৷ পরবর্তীতে তাকে আর দ্বিতীয় মেয়াদে সংসদে যাওয়ার সুযোগ দেয়নি। সুযোগ দেওয়া হয়েছে উগ্র বাসন্তী চাকমাকে।

তিন পার্বত্য জেলার তিনজন পুরুষ এমপি এবং একজন নারী এমপিসহ মোট চার জন এমপি যদি উপজাতি সম্প্রদায় থেকে হয় তাহলে কতটা বৈষম্য করা হয়েছে এবং বাঙ্গালীকে কতটা অবজ্ঞা করা হয়েছে তার বিচার ও বিশ্লেষণ করার দায়িত্ব সচেতন মহলের কাছে বার্তালাম।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী নেতৃত্ব সৃষ্টি না হওয়ার পেছনে অনেক জানা অজানা কারণ রয়েছে। এখানকার বাঙ্গালীরা অবহেলিত এবং অনৈক্যে বিভাজিত। তাই সবকিছুতে প্রাধান্য উপজাতিদের। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামকে তাদের সন্ত্রাসদের রাজত্ব কায়েম করেছে।

পার্বত্য বাঙ্গালীদের মধ্যে যোগ্য লোক যেখানে পাওয়া দুষ্কর সেখানে নারী নেত্রী ফিরোজা বেগম চিনু পার্বত্যবাসীর জন্য আশার বাণী বলা যায়৷

পার্বত্যবাসীর স্পষ্ট দাবি- পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈষম্য, অনিয়ম ও জাতিগত ভেদাভেদ উত্তরণে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ রাষ্ট্রের পার্বত্য অবস্থান যেনো পাকাপোক্ত হয় সেলক্ষ্যে ফিরোজা বেগম চিনুকে সংরক্ষিত নারী এমপি করার জন্য সরকারের কাছে গণদাবি।

আগের পোস্টপার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি’র) কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হলো।
পরের পোস্টজাতিসংঘে সেনা নিয়োগ বন্ধের চিঠি প্রেরণকারী একজন দেশদ্রোহী এবং জেএসএস সন্ত্রাসী।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন