জাতিসংঘে সেনা নিয়োগ বন্ধের চিঠি প্রেরণকারী একজন দেশদ্রোহী এবং জেএসএস সন্ত্রাসী।

0

পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী আছে বিধায়ী এখানকার উপজাতীয়রা নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারে। অত্রাঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার হলেই এ অঞ্চলের উপজাতিরা স্বজাতি সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, হানাহানি ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হবে। আভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেরা বিলুপ্ত হবে। বেশ করে চাকমাদের একটি অংশের দেশ বিভাজন এবং পূর্বেকার দেশান্তরি হওয়ার ইতিহাস সবারই জানা৷ চাকমাদের কোন নিজেস্ব দেশ নেই। তারা একটি যুদ্ধবাজ এবং অকৃতজ্ঞ উগ্র জাতি। সেনাবাহিনীর বিরোধিতা কেবলমাত্র তারাই করে যারাই পার্বত্য চট্টগ্রামকে চাঁদাবাজি এবং অস্ত্রবাজির স্বর্গরাজ্যের পরিণত করেছে।

প্রসঙ্গটা এজন্য এনেছে গত ১৬ জানুয়ারী- কানাডা প্রবাসী পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মদের মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন সিএইচটি ইন্ডিজেনাস পিপলস কাউন্সিল অব কানাডা কর্তৃক রাঙ্গামাটি জুরাইছড়ি বাঙ্গালী ও উপজাতি কর্তৃক বিরোধপূর্ণ সামান্য ভূমির বিষয়ে জাতিসংঘ সচিবালয়ে চিঠি লিখেছে। শান্তিরক্ষা মিশন বিভাগের শান্তিরক্ষা অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মি: জিন পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স সহ জাতিসংঘের নিকট চিঠি পাঠিয়েছে প্রীতি চাকমা! দুঃখজনক হলেও সত্য যে, চিঠি প্রেরণকারী একজন উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি। তার কাজ হচ্ছে বিদেশের মাটিতে বসে দেশদ্রোহীতামূলক কর্মকাণ্ড এবং পার্বত্য সন্ত্রাসীগোষ্ঠী জেএসএস সন্তুর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী প্রীতি চাকমা একসময় জেএসএস সন্তু গ্রুপের সাংগঠনিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। সে দেশে থাকাকালীন জেএসএস সন্তুর গ্রুপের জন্য চাঁদা কালেকশন করেছিল নিরিহ উপজাতিদের থেকে। সাপ্তাহিক হাটবাজার, যানবাহন, কাঠ, বাঁশ ও সবকিছু থেকে সে চাঁদাবাজি করত। মাসে প্রায় তার ২০ লাখ টাকা চাঁদা কালেকশন হত। তৎকালীন উপজাতিদের অনুরোধে সেনাবাহিনী প্রীতি চাকমার চাঁদাবাজিতে বাধাপ্রধান করে৷ তাই নিরাশ হয়ে প্রবাসে পাড়ি জমান এই প্রীতি। কানাডা অবস্থান করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তৎপর হন। তারই ধারাবাহিকতায় হীন উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য স্বঘোষিত নেতা হয়ে গঠন করেন, ‘সিএইচটি ইন্ডিজেনাস পিপলস কাউন্সিল অব কানাডা।’

তার এই সংগঠনের নেতাকর্মী তেমন একটা নেই৷ ৪/৫ জন লোক নিয়ে পাতি নেতার মত লাফালাফি করে বিদেশের মাটিতে সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালী তথা বাংলাদেশের বিরোধিতা করে বিনিময়ে জেএসএস থেকে কিছু মাসোহারা গ্রহণ করেন।

প্রীতি চাকমা তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠনের নামের পাশে যুক্ত করেছে ‘ ইন্ডিজেনাস পিপলস’! অবাক হলাম এজন্য যে, বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ীও তারা তাই। তাহলে সে ‘ইন্ডিজেনাস’ দাবি করে কীভাবে উক্ত শব্দ ব্যবহার করে? যেখানে সংগঠনের নামে গলদ আছে সেখানে তার উদ্দেশ্যে প্রতারণা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়।

চিঠির লক্ষ্য যে হীন উদ্দেশ্য তা সম্মানিত পাঠকমহল একটু পড়লে স্পষ্ট হবে। তাই হুবহু চিঠিটি তুলে ধরা হলো-

“চিঠিতে অভিযুক্ত মানবাধিকার লংঘনকারী সেনা কর্মকর্তারা হলেন- ১. ক্যাপ্টেন মোশাররফ, ক্যাম্প কমান্ডার, যক্ষাবাজার সেনা ক্যাম্প,২ বীর, জুরাছড়ি ও ২. লেঃ কর্নেল জুলফিকলি আরমান বিখ্যাত, জোন কমান্ডার, বনযোগীছড়া সেনা জোন, ২ বীর, জুরাছড়ি।
সেনাবাহিনীকে সহযোগিতাকারী মুসলিম বাঙালি সেটেলাররা হলেন- ১. মোঃ সিরাজ (৩২), দিনমজুর ও খোলা তেল বিক্রেতা; ২. মোঃ সোহেল (৩০), কাঠমিস্ত্রী; ৩. মিঠুন (২৭), চায়ের দোকানদার; ৪. মোঃ ফয়সাল (২৯), কাপড়ের দোকানদার ও ৫. অজ্ঞাতনামা।
চিঠিতে ঘটনার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, জুরাছড়ি উপজেলা সদরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে একজন আদিবাসীর প্রায় ০.২০ একর ভূমি রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বসতিদানকৃত কয়েকজন সেটেলার উক্ত জায়গাটি বেদখলের চেষ্টা করে। তাদের এই আদিবাসীদের ভূমি বেদখলের চেষ্টা পার্বত্য চট্টগ্রামে এক নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। হিমায়ন চাকমার মালিকানাধীন ০.২০ একর পরিমাণ ঐ জায়গাটি সেটেলাররা তাদের নিজেদের জায়গা বলে দাবি করে জায়গাটির চারিদিকে খুঁটি পুঁতলে, তা জানার পরপরই হিমায়ন চাকমা একদল আদিবাসী গ্রামবাসী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এতে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে আদিবাসীরা পোঁতা খুঁটিগুলো উপড়ে ফেলে। এর পরপরই সেটেলাররা পার্শ্ববর্তী সেনা ক্যাম্পে গিয়ে সহযোগিতা চায়। যক্ষাবাজার সেনা ক্যাম্প হতে ক্যাপ্টেন মোশাররফের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ঘটনাস্থলে যায়। কয়েক মিনিট পর বনযোগীছড়া সেনা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল জুলফিকলি আরমান বিখ্যাত, পিএসসি-ও সেখানে উপস্থিত হন। উভয়পক্ষের সাথে কথা বলার পর সেনাবাহিনী ৫ আদিবাসী ব্যক্তিকে আটক করেন এবং ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও ভয়ানকভাবে মারধর করেন এবং চিকিৎসার জন্য ওই ৫ আদিবাসীকে হাসপাতালে ভর্তি করান।
আটককৃত আদিবাসীদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বেদনার বিষয় যে, মুসলিম সেটেলাররা যদিও অবৈধভাবে ভূমি বেদখলের চেষ্টা করছিল, তবু তারা তাদের অন্যায় কাজ থেকে রেহাই পেয়ে গেল। এতে আরও বলা হয়, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী সকল অস্থায়ী ক্যাম্প অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে, কিন্তু তারা এখনো ভূমি বেদখলের মত মানবাধিকার লংঘন ঘটিয়ে সেটেলারদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে।
সামরিক বাহিনী সবসময়ই দমন-পীড়ন দিয়ে আদিবাসীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং এখানে সংঘাত নিরসনের পরিবর্তে তারা মানবাধিকার লংঘন জোরদার করে। সুতরাং আপনার কাছে আমাদের আবেদন, উপরোক্ত দুই সামরিক কর্মকর্তাসহ সামরিক বাহিনীকে যেন শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া না হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তির জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।”

উপরোক্ত চিঠি পড়ে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে অনুধাবন হলো পূর্বেকার সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে এর থেকে অনেক বড় ঘটনা বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা সংঘটিত হয়েছিলো৷ তখন তা স্থানীয় উপজাতি ও বাঙ্গালী নেতৃত্বশ্রেণী সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরসন করেছে৷ অথচ উক্ত ভূমি বিরোধ ঘটনাটি সেনাবাহিনী উপজাতি হেডম্যান-কার্বারী এবং মান্যগন্য ব্যক্তিবর্গকে সমন্বয়ে নিরসন করতে তাগিদ দেয় এবং যাতে তা কেদ্র করে বড় ধরনের ঘটনা না ঘটে। সেলক্ষ্য কিছু দুষ্কৃতকারীকে সর্তক করার জন্য তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্যাম্পে ডেকে নেয়। যা পরে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পরে ছেড়ে দেয়। এখানে সেনাবাহিনী কোনপ্রকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে মনে হয়না। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেও সেনাবাহিনীর কোন অন্যায় খুঁজে পা-ও-য়া যায়নি৷ সবাই বরং সেনাবাহিনীর এমন পদক্ষেপের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা দাবি তুলেছে, ১৯৯৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী পাহাড় থেকে সব সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের কথা৷ চুক্তি মৌলিক শব্দ লঙ্ঘন করে যদি তারা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে থাকতে পারে তাহলে সেনাবাহিনী কেন পার্বত্য অখণ্ডতা রক্ষার স্বার্থে থাকতে পারবে না? তারা চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসবাদ এবং বাঙ্গালী ভূমি বেদখল করবে আর উপজাতি-বাঙ্গালী সংঘাতের উস্কানি দিবে তা সেনাবাহিনী বসে বসে দেখবে! এই অমূলক ধারণা তাদের কী করে হয়? তা আমার বোধগম্য নয়।
যারা অপপ্রচার, কুৎসা এবং মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে তারা সেনাবাহিনীর পার্বত্য কার্যক্রম সহ্য করতে পারে না। মোদ্দাকথা হলো- সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন নেমেছে এবং জাতিসংঘে চিঠি দিচ্ছে। যদিও এমন চিঠিতে কার্যকর কিছুই হবে না। কারণ জাতিসংঘ অবগত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘদিন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে নিয়োজিত রয়েছে; সেনাবাহিনী কর্তৃক সাধারণ মানুষের বিন্দুমাত্র ক্ষতিসাধন কখনো হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না এটা যেমন সাধারণ উপজাতিদের বিশ্বাস আছে তেমনি জাতিসংঘেরও অগাধ বিশ্বাস আছে।

প্রীতি চাকমা তথা জেএসএস এর এমন আয়োজনে রহস্য তো অবশ্যই আছে।
সামান্য ০.২০ একর জমির বিরোধ নিয়ে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাওয়া বিস্ময়কর। বিষয়টি গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস বলে হিল ব্লগার ফোরাম বা HBF মনে করেন। এখানে তাদের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য হলো- পার্বত্য চট্টগ্রামের সেনাবাহিনীর কার্যক্রমে বাধাপ্রদান করা এবং সেনাবাহিনী যেন পাহাড়ে বিতর্কিত হয় সেসাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি যেন ক্ষুন্ন হয়। তারই আলোকে জেএসএস সন্তু প্রীতি চাকমার মাধ্যমেই জাতিসংঘে চিঠিটি প্রেরণ করেছে বলে প্রাথমকিভাবে সচেতন মহল মনে করে।

কতটা দেশদ্রোহী ও অকৃতজ্ঞ হলে দেশের গর্বের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়? উপজাতিদের কল্যাণে দিনরাত্র নিরাপত্তা দিয়ে যাওয়া সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া জাতির অকৃতজ্ঞ কাউকে বাংলার বীর জনতা কখনো ক্ষমা করবে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More