জুরাছড়িতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেএসএস ও পিসিপি’র সশস্ত্র তৎপরতা বৃদ্ধি।

0

রাহুল দত্ত, রাঙ্গামাটি- গত শনিবার ৪ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জুরাছড়ি উপজেলায় নির্বাচনের প্রচারনার খরচ যোগাতে চাঁদাবাজি করার সময় তিন জনকে যক্ষ্মা বাজার সেনা ক্যাম্প এর ধামাইপারা চেকপোস্ট এ গ্রেফতার করে। তন্মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ পিসিপি’র জুরাছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুরেন চাকমা (২৪), পিতা: অনিল কুমার চাকমা পানছড়ি, লুলংছরি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় তিনি জেএসএস সন্তু দলের ছাত্র সংগঠন পিসিপি ও সশস্ত্র গ্রপের সক্রিয় সদস্য। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপম চাকমা (২৪), জামুরাছরি, পিতা: বীরেন্দ্র চাকমা ও রনি চাকমা (২৩), পিতা: প্রেম কুমার চাকমাকেও আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হতে নগদ ১০,৩৯৫ (দশ হাজার) টাকা, ফয়েল পেপারসহ ১০ পিস ইয়াবা এবং চাঁদা সংগ্রহের তালিকা উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য যে, তারা যক্ষ্মাবাজার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ১,১০,০০০ (এক লক্ষ দশ হাজার) টাকা আদায় করেছে। এরূপ জুরাছড়ির বিভিন্ন বাজার থেকে আনুমানিক ৭/৮ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করে সুরেশ কুমার চাকামা এর নির্বাচন উপলক্ষে। নির্বাচনী প্রচারণার খরচ যোগাতে এই সপ্তাহে জুরাছড়ি উপজেলায় সুরেশ কুমার চাকমা (সাবেক চেয়ারম্যান) এর এই চাঁদাবাজির অর্থ সংগ্রহ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ক্যাডারদের।

গ্রেফতার কৃত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ক্যাডাররা জেএসএস সন্তু দলের কালেক্টর সুবর্ণ চাকমার কাছে এর আগের সংগ্রহীত চাঁদার টাকা হস্তান্তর করেন। এই চাঁদার টাকা কালেকশন করে পিসিপি’র জুরাছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রূপম চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুরেন চাকমা এবং তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রনি চাকমা, তারা ছাত্র সংগঠনের আড়ালে মূলত জেএসএস সশস্ত্র গ্রুপের সদস্য।

পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উক্ত নেতারা জেএসএস সন্তু সমর্থিত প্রার্থীদের জন্য উপজেলা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে চাঁদাবাজি এবং নাশকতামূলক কাজের প্রস্তুতি গ্রহন করছিল। আরও জানা যায় যে, সুরেশ কুমার চাকমার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে সশস্ত্র কার্যক্রমের জন্য সরাসরি আদেশ পেয়েছিলো তারা।

অভিযোগ আছে যে, সুরেশ চাকমা চাঁদাবাজির সাথে নিজে সম্পৃক্ত রয়েছে এবং বহিরাগতদের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা করে যাচ্ছেন। জেএসএস সন্তু দলের সন্ত্রাসীদের দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় হেডম্যান, কারবারি এবং প্রত্যেক পরিবার থেকে একজন করে নিয়ে সুরেশ কুমার চাকমা, কামিনি চাকমা এবং অনিতা চাকমাকে জয়ী করার জন্য হুমকি দিচ্ছে। যদি গ্রামের কেউ ভোট না দেয় তাহলে তাদের কে জরিমানা করা হবে ও এলাকা ছাড়া করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
মূলত জুরাছড়ি উপজেলা জেএসএস সন্তু অধ্যুষিত এলাকা, এই এলাকায় তারা আধিপত্য বিস্তার করে
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায় যে, ঈদ উপহার এর ১০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করে বাকি ৩৪ মেট্রিক টন চাল এর টাকা নির্বাচন এর জন্য আত্মসাৎ করে সুরেশ চাকমা। সে টাকা দিয়ে তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোপূর্বে জনসাধারণের কাছ থেকে তার নামে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। আরও জানা যায় যে, চেয়ারম্যান হিসেবে আত্মসাৎ করা টাকায় ঢাকাতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনা সহ বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখায় এই চাঁদার টাকা ব্যবহার করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More