পাহাড়ী সব নারী-পুরুষ কী নিরিহ?

0

অবরোধের নামে সড়কে প্রতিবান্ধকতা সৃষ্টি করা এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা এই নারীদের যদি আজকে সেনাবাহিনী আটক করতো তাহলে একটি মহল বলতো এই পাহাড়ি নারীরা সবাই অসহায় বা নিরীহ। কিন্তু এই পাহাড়ি নারীরা এক একটা ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। আজকে যে ঘটনাগুলো তারা বাঘাইছড়ি সাজেক উজো বাজার ও দীঘিনালা মারিশ্যা সড়কের ১০ নম্বর করেছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য না। তারা যেভাবে সেনাবাহিনীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে তা যদি পৃথিবীর অন্য কোন দেশে হতো তাহলে কয়েকটা লাশ পড়ে যেতো। কিন্তু আমাদের সেনাবাহিনী যথেষ্ট ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে এবং ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। সেনাবাহিনী দেশরক্ষার পাশাপাশি মানবতা, মানবাধিকার ও শান্তিস্থাপনে কাজ করে। আমাদের সেনাবাহিনীর আছে এক সুদীর্ঘ গৌরব ইতিহাস। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অত্যন্ত প্রহরী। এটা তো মোটামুটি সবারই জানা দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে উজ্জ্বল কিন্তু সেনাবাহিনী করেছিলো, এখনো করে আসছে।

সেনাবাহিনীর উপর চড়াও হওয়ার ভিডিও

আজকের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায়তে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে সেনাবাহিনীর এই নীরবতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। সেনাবাহিনী কেন একশনে যায়নি? সেনাবাহিনীর নীরবতার অন্যতম কারণ, নারীদের প্রতি সেনাদের বিশেষ সম্মান প্রদর্শন। নারীরা কারো মা-বোন কারো মেয়ে কারো বা স্ত্রী। তাই এই বিবেকবোধ থেকে সেনাবাহিনী আজকের ঘটনা ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন।
আমাদের দেশের সুশীল সমাজ, প্রগতিশীল, বিশিষ্টজন ও গণমাধ্যম বরাবরই পাহাড়ের উগ্র এই উপজাতি নারীদের অসহায় ও নিরীহ বলে সম্বোধন করতে করতেই আজ এই নারীরা সেনাবাহিনীর গায়ে হাত তোলার দুঃসাহস প্রদর্শন করছে। এটা কোনভাবেই কাম্য হতে পারেনা।

এই নারীদের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লেলিয়ে কারা দিয়েছে সেটা কারোই অজানা নয়। ইউপিডিএফ মৃত আইন শাসনবিধি বলবৎ করতে অবরোধ দিয়ে এই নারীদের সড়কে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। এমনকি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ফাঁদ হিসেবেও ব্যবহার করেছে। কিন্তু এই গভীর ষড়যন্ত্র সেনাবাহিনীর কৌশলের কাছে পরাজিত হয়েছে।

একটি কথা জেনে রাখুন, বাঙ্গালী হোক কিংবা পাহাড়ি হোক ভালো ঘরের কোন নারী এভাবেই প্রকাশ্যে অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় একটি দেশের সর্ববৃহৎ বাহিনীর গায়ে আসেনা। আজকে যেসব নারী সেনাবাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছে তারা সভ্য জগতের নারী নয়। তারা আমাদের মা-বোন, মেয়ে বা স্ত্রী হতে পারেনা। তারা নারী জাতির কলঙ্ক। তাদেরকে সেনাবাহিনী ছেড়ে দিয়ে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছে। তার মানে এই নয় যে তাদের কাছে মাথা নত করেছে। যদি তারা এই মানসিকতা ধারণ করে তাহলে সেটা তাদের জন্য মস্ত বড় ভূল। তারা যা করেছে সেটার জবাব অবশ্যই পাবে৷

পাহাড়ে সন্ত্রাসী সংগঠন কর্তৃক মানবঢাল ও দাবারগুটি হিসেবে ব্যবহৃত উপজাতি নারীদের নিরিহ বলে প্রকাশ করে তাদেরকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অপরাধ করার লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। পুরুষদের ক্ষেত্রেও এমনটা হচ্ছে নিরীহ বলে তাদেরকে অপরাধ ও নানা অপকর্ম থেকে দায়মুক্তি দিচ্ছে। একটি বিস্ময়কর বিষয় হলো, পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা যে কোন অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে পাহাড়ীরা আটক হলে তাদেরকে সহজসরল বা নিরিহ বলে প্রচার করা হয়। প্রসঙ্গে আসি- পাহাড়ী সব নারী-পুরুষ কী আসলে নিরীহ? বাস্তবিক অর্থে পাহাড়ী সব নারী-পুরুষ সন্ত্রাসী না আবার সব নারী-পুরুষ নিরীহ না। ভালো খারাপ সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে। শুধু আত্মরক্ষার অধিকার বলে সারা বছর বাঙ্গালী, সেনাবাহিনীর উপর চড়াও হবে এটা কেমন বিধিবিধান? পাহাড়ীরা সারাবছর অধিকার পাবে? আন্দোলন, সংগ্রাম ও সশস্ত্র কার্যক্রম তাকে ঘিরে। নতুন নতুন সংগঠন গর্জে উঠবে নিত্যনতুন দাবিদাওয়া নিয়ে! এটা শুধুমাত্র এদেশেই চলে। প্রতিবেশে দেশগুলোর পাহাড়ীদের অধিকার কতটুকু তা কী আমরা জানিনা? পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে তো সবধরনের অধিকার পাহাড়ীদের দিয়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও সারাবছর তাদের এত কিসের অধিকার বা দাবিদাওয়া? সবকিছু মামার বাড়ির আবদার নাকী? বাংলাদেশ তথা বাঙ্গালী জনগণ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর প্রতি উদার, সহনশীল ও মানবিক এবং তাদের অধিকার প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক সংগঠন সৃষ্টি হয়ে বা জাতির অধিকারের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুন-গুমসহ দেশের বিরোধিতা করবে আর সারাবছর এদেশের জনগণ তা সহ্য করবে। তা কী হয়? যেহেতু পুরো বিষয়টি আজকের শাসনবিধি বলবৎ ইস্যুতে অবরোধের কর্মকাণ্ড নিয়ে সেহেতু নারীদের মাঠে নামিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার চেষ্টাকারী ইউপিডিএফ এর মুখোশ উন্মোচন করাটা অত্যান্ত জরুরী।

ইউপিডিএফ একটি রাষ্ট্র বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। স্বায়ত্তশাসন দাবির অন্তরালে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ভারী অস্ত্র সরবরাহ ও গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। তাদের চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুন-গুমে আজ সাধারণ পার্বত্যবাসী অতিষ্ঠ। তারা বিভিন্ন সময় অগণিত বাঙ্গালী ও নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের উপর হামলা করেছে। ইউপিডিএফ এর বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগ। সময় হলে ইউপিডিএফ তার কঠিন জবাব পাবে। তাই সকলকে অনুরোধ করবো সংগঠনটির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এবং অপপ্রচারে বিভ্রান্তি না হয়ে সচেতন হোন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More