রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক ইকো ভ্যালিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পর্যটকদের যাতায়াতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘সাজেকে পর্যটক গমন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।’
আজ সোমবার দুপুরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যেখানে আগুনে পুড়ে গেছে ৯৪টি স্থাপনা, যার মধ্যে রয়েছে ৩২টি রিসোর্ট, ৩৫টি বসতবাড়ি, ২০টি দোকান এবং ৭টি রেস্টুরেন্ট।
সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেব বর্মন জানান, পুড়ে যাওয়া ৩৫টি বসতবাড়ির মধ্যে ১৯টি ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর, বাকিগুলো লুসাই জনগোষ্ঠীর।
অন্যদিকে, রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের মিডিয়া উইংয়ের সহকারী কমিশনার ইমতিয়াশ ইয়াসিন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মোট ১২০ থেকে ১৪০টি স্থাপনা পুড়ে গেছে, তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে।
সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ চাকমা জানান, ‘সোমবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে প্রথমে ইকো ভ্যালি রিসোর্টে আগুন দেখা যায়। পরে এটি আশপাশের অন্যান্য রিসোর্ট ও স্থাপনায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জনগণ, সেনাবাহিনী ও পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।’
পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বাঘাইছড়ি, দিঘিনালা, খাগড়াছড়ি, পানছড়ি ও রাঙামাটি ফায়ার স্টেশনের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন বলেন, ‘বিকাল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও অন্যত্র যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য পানি ছিটানো হচ্ছে। তবে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় পানি সরবরাহে বেশ সমস্যা হয়েছে।’
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।’
এই অগ্নিকাণ্ড সাজেকের পর্যটনখাতকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে ফেলেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রশাসন পর্যটকদের জন্য নতুন নির্দেশনা দেবে বলে জানা গেছে।