হিলনিউজবিডি প্রতিবেদক:
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত না করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কিনা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না—এই মর্মে রুল জারি করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট।
গতকাল রবিবার (৯ মার্চ), বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন। একইসঙ্গে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য প্রণতি রঞ্জন খীসা ও রাঙাবী তঞ্চঙ্গাকে পরিষদের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ৭ নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন পুনর্গঠনের জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে (স্মারক: ২৯,০০,০০০০,০০০,২১৪,১৮,০০২২,২৪,১১৯)। অভিযোগ উঠেছে, এই পুনর্গঠনে রাঙামাটি জেলার দশটি উপজেলার প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত না করে এক সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, হত্যা মামলার আসামি ও একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জেলা পরিষদের পুনর্গঠনের বিরুদ্ধে জুড়াছড়ি, বরকল, কাউখালী ও রাজস্থলী উপজেলার সাধারণ জনগণ বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় স্থানীয়দের পক্ষে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
উক্ত রিট মামলাটি দায়ের করেন আইনজীবী এ্যাডভোকেট রাজীব চাকমা, জসিম উদ্দিন, পুলিন বিহারী চাকমা ও উথান মারমা। মামলাটি পরিচালনা করেন হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী মো. সুলতান উদ্দিন, নিবোলাস চাকমা ও রতন কুমার।
আদালতের রুল অনুসারে, জেলা পরিষদ পুনর্গঠনে সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুসরণ করা হয়েছে কিনা, তা যাচাই করা হবে। পাশাপাশি, বিতর্কিত দুই সদস্যকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
আদালতের রুলের পরিপ্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে স্থানীয় জনগণের দাবি এবং আইনি লড়াই পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
(হিলনিউজবিডি/৯ মার্চ ২০২৫)