অদ্য রবিবার দুপুরে রাঙামাটির রানী দয়াময়ী স্কুলে হিজাব ইস্যুতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিল অভিভাবক ও রাঙ্গামাটি সর্বস্তরের জনতার পক্ষে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়
মাননীয় জেলার অভিভাবক, আমরা পার্বত্য জেলা রাঙামাটির শান্তিপ্রিয় মানুষ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ স্মার্ট গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সভ্য আধুনিক যুগে রাঙামাটি জেলা শহরের এক শিক্ষাকার ধর্ম বিরোধী এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক কর্মকান্ডে ক্ষুব্দ ও ব্যাথিত স্কুলটির শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্ম বিরোধী উস্কানি হিসেবে
“হিজাব পড়লে স্কুলে নয়, মাদ্রাসায় ভর্তি হও” ছাত্রীদের এমন নির্দেশনা দিলেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জাতিসত্তার শিক্ষিকা দিপালী দেওয়ান। এমন নির্দেশনা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছেন দিপালী দেওয়ান।
হিজাব পড়লে বিদ্যালয়ে নয়, মাদ্রাসায় গিয়ে ভর্তি হও; অন্যথায় এই বিদ্যালয়ে হিজাব পড়ে আসতে পারবে না। এমন মন্তব্য করে নিজ শ্রেণী কক্ষেই হিজাবধারী শিক্ষার্থীদের বেতের মারধরের ভয় দেখিয়ে ধমকিয়ে জোরপূর্বক হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে রাঙামাটি শহরের ঐতিহ্যবাহি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা দিপালী দেওয়ানের বিরুদ্ধে। শুধু দিপালী দেওয়ানই নয় রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্য ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর কিছু শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন তারা মুসলিম শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতার নাম্বার কম দেন ও নানাভাবে কটাক্ষ করান অন্য সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে। যা অসাম্প্রদায়িকতার এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প জন্ম দেয়। মান্যবর জেলা প্রশাসক মহোদয় এই বিষয়ে আপনি তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা নিবেন বলে আমরা আশা করছি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানার পরে প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিক শিক্ষিকা দিপালী দেওয়ানকে একটি চিঠি দিয়ে সর্তক করেছেন, অথচ উনাকে শোকজ করার দরকার ছিলো, বিষয়টি দুঃখজনক আমরা চাই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
আমরা এই জাতিগত ও ধর্মীয় বিদ্বেষ এর অবসান চাই।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলা হচ্ছে সম্প্রীতির নিদর্শন। এই জেলার প্রাণ কেন্দ্রে মূল শহরের একটি স্কুলে শিক্ষকদের এই ধরণের বিদ্বেষ মূলক মনোভাব নিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করানো সম্ভব না। এতোদিন শিক্ষার্থীরা ভয়ের কারণে মুখ খুলতে পারেনি। এখন মুখ খুলেছে এই জাতিগত ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা। এইসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি স্কুল থেকে স্থায়ী বহিস্কার করার জোর দাবি জানাচ্ছি আমরা অভিভাবক মহল।
আমাদের দাবী সকল ধরণের বৈষম্যের উর্দ্ধে উঠে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। অন্যথায় আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্লাস বর্জন, মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ তীব্র আন্দোলনের ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবো।
অভিভাবকদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রোকেয়া বেগম, জরিনা আক্তার। সর্বস্তরের জনতার পক্ষে স্বাক্ষর করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি মোহাম্মদ হাবিব আজম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম পৌর সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন।