শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে কুকি-চিনের ৩ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক।

0


পাহাড়ে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে দ্বিতীয় বারের মতো শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাহাড়ের শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল পৌনে ১১টায় রুমা উপজেলার বেথেল পাড়ার কমিউনিটি সেন্টারে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

কেএনএফ’র সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে ও পাহাড়ে সংঘাত বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বৈঠক পৌনে ১১টা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় সোয়া ১টায়।
বৈঠকে ১৩ সদস্যের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির নেতৃত্ব দেন কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। অন্যদিকে কেএনএফ’র ৮ সদস্যের নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লালজংময় বম ওরফে ব্রিগেডিয়ার মুইয়া।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লালজংময় বম ওরফে ব্রিগেডিয়ার মুইয়া বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে সংলাপে কুকি-চিন সম্প্রদায় বিশ্বাস করে এই আলাপ-আলোচনা ফলপ্রসূ হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কেএনএফ এর সাংগঠনিক সম্পাদক লাল সাং লম বম জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থানচি ভেলাখুমে পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় কেএনএফ জড়িত নয়।

শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, গত বছরের ৫ নভেম্বর প্রথম বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেটার খুব কাছাকাছি উভয়পক্ষ খুব সুন্দর পরিবেশে আন্তরিকভাবে আলোচনা করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, কেএমএফ’র দাবি নামাগুলোর মধ্যে যেগুলো শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে। আর যেগুলো সম্ভব নয় সেগুলো সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন এবং আগামী এপ্রিল মাসে আবারও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
কেএনএফ পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন লাল-এংলিয়ান, পাস্টর ভানলিয়ান, গ্রাহাম বম, কয়াললিন বম, সাংপাহ খুমী, আজৌ লুসাই।
শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. করিম, জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, সিং ইয়ং ম্রো, সি অং খুমী, লালজার লম বম, সাংবাদিক উজ্জল তঞ্চঙ্গ্যাসহ আরও অনেকে।
এর আগে, গত বছরের ৫ নভেম্বর প্রথম সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল রুমা উপজেলা মুনলাই পাড়ায়। ওই বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন করে সংঘাতে না জড়ানোসহ উভয়পক্ষের মধ্যে ছয় দফা নিয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফা বৈঠকে এলাকায় বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাসহ আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ বান্দরবান রাঙ্গামাটি সীমান্তে একটি পাড়ায় হামলার মধ্যে দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে এই সংগঠনটির সংঘর্ষে ৫ সেনা সদস্যসহ কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়। কেএনএফ’র ১৭ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও অভিযোগ উঠে কুকি চিনের বিরুদ্ধে। পাহাড়ে সংঘাত থামাতে গত বছরের মে মাসে গঠন করা হয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।

আগের পোস্টকেএনএফ এর কারণে বান্দরবানে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে!
পরের পোস্টসার্বভৌমত্ব ও সংবিধান বজায় রেখেই কেএনএফ দাবিদাওয়া উত্থাপন করা উচিত।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন