সার্বভৌমত্ব ও সংবিধান বজায় রেখেই কেএনএফ দাবিদাওয়া উত্থাপন করা উচিত।

0

দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকের চূড়ান্ত বিষয় জানা না গেলেও সার্বভৌমত্ব ও সংবিধান বজায় রেখেই কেএনএফ দাবিদাওয়া উত্থাপন করা উচিত।

গত (মঙ্গলবার) ৫ মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ সকাল পৌনে এগারোটা বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার বেথেল পাড়া কমিউনিটি সেন্টার হল রুমে কেক কাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ২য় দফার বৈঠক। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সাথে সরাসরি বৈঠক করেছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। কেএনএফ সশস্ত্র সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে তাদের দাবিদাওয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। প্রায় তিনঘন্টা ধরে হল রুমে দু’পক্ষের মাঝে সাতটি বিষয়ে স্বাক্ষরিত সমাঝোতা মাধ্যমে এই বৈঠক শেষ হয়।

শান্তি কমিটি ও কেএনএফ মধ্যকার বৈঠককে সচেতনমহল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল সম্প্রদায় সাধুবাদ জানিয়েছে। এবং কেএনএফ এর অংশগ্রহণ কে ইতিবাচক হিসেবে দেখেছে। উক্ত শান্তি প্রক্রিয়া চলমান থাকুক। যার মাধ্যমে পাহাড়ে সকল জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেনো সহবস্থান তৈরি হয়।

প্রসঙ্গগত বিষয় হলো- বৈঠকে কেএনএফ এর পক্ষ হতে কী কী দাবিদাওয়া উত্থাপিত ছিল বা অর্জন ছিলো তা বিস্তারিত আকারে জানা না গেলেও সচেতন মহল মনে করে কেএনএফ রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও সংবিধান বজায় বা অক্ষুণ্ণ রেখে দাবিদাওয়া পেশ করা উচিত। কেএনএফ এর মনে রাখা উচিত আমাদের রাস্ট্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা কুকিভুক্ত উপজাতিদের দাবিদাওয়া ও অধিকার বিষয়ে সচেতন এবং আন্তরিক বিধায়ী সমস্যাটি আলোচনার টেবিলে সমাধান করার চেষ্টা করছে। তাই তাদেরও উচিত অযৌক্তিক, অন্যায় আবদার বা সংবিধান পরিপন্থী দাবিদাওয়া তুলে না ধরা। অযোগ্য দাবিদাওয়া উত্থাপন করে চলমান শান্তি প্রক্রিয়া যেনো ব্যাহত না করে। বাংলাদেশের সংবিধানে এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা আছে কিন্তু আঞ্চলিকতার ঠাঁই নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ ও দেশের জনগোষ্ঠী এবং সংবিধান, ইতিহাস, অর্থনীতি ও ভৌগোলিক কোনকিছুর সাথে যাতে সাংঘর্ষিক না হয়। তাই কোনপ্রকার সংবিধান বিরোধী বা গণবিরোধী দাবি যেনো ঠাঁই না পায় সে বিষয়টির সর্বোচ্চ বিবেচনায় কেএনএফ ও সকলেই চিন্তা করবেন বলে দেশপ্রেমিক জনতার দাবি।

বলাবাহুল্য যে, সকল জাতির বিবেচনা করে যেনো দেন দরবার করে। কোন পক্ষের জন্য যেনো স্বার্থ পরিপন্থী না হয়।এমন কোন বিষয় স্থান যেনো না থাকে যার কারণেই পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা তাদের জনগোষ্ঠী অবস্থান ও সবকিছুর সহবস্থান লঙ্ঘিত করে। তাদের দাবিদাওয়া হওয়া উচিত- জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অনুপাত, এবং ইতিহাস, ঐতিহ্য, অধিকার ও অবস্থান বিবেচনায় রেখে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যান্য জনগোষ্ঠী আছে চুক্তির ফলে যেনো তাদের অধিকার বা পরিচয় ও অস্তিত্ব সংকট তৈরি না করে। একটি অঞ্চলের সকল সম্প্রদায় যেনো মিলেমিশে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রেখে সহাবস্থানে বাস করতে পারে সে বিষয়টি কেএনএফ বিবেচনা করা উচিত। এবং সে মোতাবেক দাবিদাওয়া পেশ করা উচিত।

কেএনএফ এর বৈরী আচরণ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদ রাস্ট্র অবশ্যই সাধারণ ক্ষমার আওতায় এনে তাদের পুনর্বাসনসহ কুকিভুক্তি জাতির অধিকার নিশ্চিত করবে। তাই বলে এমন অযৌক্তিক দাবি বা স্বায়ত্তশাসন কিংবা স্বশাসন ব্যবস্থার মত সংবিধান পরিপন্থী দাবিদাওয়া যেনো কেএনএফ না করে বসে৷ তাই কেএনএফ এর প্রতি সচেতন মহল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য সম্প্রদায়ের দাবি থাকবে- কেএনএফ এর দাবিগুলো যেনো সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। এবং তা যেনো বিবেচ্য বিষয় হয়।

উল্লেখ যে, কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষে ২০২৩ সালের জুন মাসে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার নেতৃত্বে ১৮ জন সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। পাহাড়ে বিরাজমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকবার ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক হলেও সবশেষে গত ২০২২ সালের ৫ নভেম্বর রুমার মুনলাই পাড়ায় কেএনএফ এর সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বৈঠকে চারটি বিষয়ে দু’পক্ষে মাঝে সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। এবার দ্বিতীয় বৈঠকে সাতটি বিষয়ে দাবী উপস্থাপন তুলে ধরেন কেএনএফ সদস্যরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More