লেখক শাহবাজ খাঁন- চোর সিধ কেটে ঘরে ঢোকার পূর্বেই চোর যাতে
ঘরে প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হয়। অন্যথায় চোর শুধু ঘরে চুরি
করেই ক্ষ্রান্ত হয়না, পারলে ঘরের কর্তাকেও বধ করতে চায়। তাই এখন আর পিছনে
ফিরে তাকাবার সময় নাই। যতদ্রুত সম্ভব উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলোকে দমনে
কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমনটি নিতে হয়েছিলো জেএমবি নামক জঙ্গি
সংগঠনটিকে দমন করতে।
আর যদি মনে করা হয় যে, এইসব উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের কি করতে
পারবে? ওদের সবগুলো সন্ত্রাসী সংগঠনের মোট সদস্য সংখ্যার চেয়েও আমাদের একটি
সশস্ত্র সরকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যাই বেশী। সুতরাং ওদেরকে দমন করা আমাদের
জন্য ওয়ান-টু’র ব্যাপার! তবে এমন ভাবনায় নাকে খাঁটি সরিষার তৈল মর্দন করে
ঘুমানো ব্যক্তির সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করে বলতে চাই- আলী জনাব, আপনি হয়তো
অবগত আছেন যে, এইসব সন্ত্রাসীদের বর্তমান নেতা সন্তু লারমা-ই কিন্তু সাবেক
সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন শান্তিবাহিনীর প্রধাণ! অতএব সাবধান, নয়তো বিষয়টা
এমন হবে যে, আপনি পায়ে কুড়াল নয়, কুড়ালেই পা মারছেন!
তাই আমার মনে হয় বিষধর গোখরা’কে দুধ-কলা দিয়ে না পুষে বন্দি করাই
বুদ্ধিমানের পরিচয়। নয়তো এই সাপ ছোবল দিলে বাপ ডেকেও রেহাই হবেনা। এটা আমি
কথার কথা হিসেবে বলছি না, বলছি চরম সত্য উপলব্ধি করে! যেমন এর উদাহরণ সরূপ
বলা যায় শ্রীলংকান তামিল টাইগার (এলটিটিই) এর কথা। যারা একসময় ছোট্ট একটি
সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও ধীরে ধীরে সাধারণ তামিল জনগোষ্ঠীর
নারী-পুরুষ-শিশুকে একত্রিত করে বিশাল এক সন্ত্রাসী বাহিনীর ক্ষমতাধর একটি
সংগঠন তৈরী করতে সমর্থ হয়েছিলো এবং এক পর্যায়ে নিজেদের দখলকৃত অংশের
স্বাধীনতা দাবী করে আন্তর্জাতিক সমর্থনও আদায় করতে পেরেছিলো। শুধু কি তাই!
তারা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের সহযোগীতা নিয়ে নিজেদের সন্ত্রাসী
বাহিনীকে সুপরিকল্পিত ভাবে সাজিয়ে এতোই শক্তিশালী করেছিলো যে, তাদের
বাহিনীতে স্থল, নৌ, বিমানবাহিনী নামের ইউনিটও ছিলো। অর্থাৎ তারা তাদের
দাবীকৃত অংশকে আলাদা দেশ ও দেশটি পরিচালনায় যা কিছু প্রয়োজন, তার সবটুকুই
করতে সমর্থ হয়েছিলো অধ্যাপক ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের নেতৃত্বে।
এই সন্ত্রাসী বাহিনীটি তাদের দাবীকৃত অংশকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা
করতে কতোকিছুই না করেছিলো। যার দরূন তারা আত্মঘাতী বোমা হামলা করে নিজেদের
স্বজাতি ছাড়াও বৃহত্তর সিংহলী জাতির বহু মানুষকে হত্যা করেছিলো। এমনকি
তারা এতোই বেপরোয়া হয়েছিলো যে, বৃহত্তর ভারত রাষ্ট্রের প্রধাণমন্ত্রী রাজিব
গান্ধী-কে আত্মঘাতী বোমা হামলা করে হত্যা করতেও সামান্যতম দ্বীধাবোধ
করেনি। এরপর নানা সময়ে আরও বহু বড় ধরণের অন্যায় কাজও তারা করেছিলো। আর
তাইতো শেষ পর্যন্ত অনেকটা বাধ্য হয়েই শ্রীলংকান সরকার প্রধাণ রাষ্ট্রপতি
মাহিন্দা রাজপাকসে এর সাহসী অবস্থান ও কড়া নির্দেশে শ্রীলংকার সেনা-নৌ ও
বিমানবাহিনীর সম্মিলিত হামলায় তামিল টাইগারের সব সদস্য নিহত হয় এবং তাদের
নেতা স্বপরিবারে ১৮ই মে ২০০৯ সালে পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন হয়ে
যায়।
সত্যি কথা বলতে কোন মানুষ যখন বেপরোয়া হয়, তখন সে কার্তিক মাসের পাগলা
কুকুরের চেয়েও পাগল হয়; আর তখন যদি সেই পাগলা কুকুরকে পিটিয়ে বা বিষ
প্রয়োগে হত্যা করা না হয়, তাহলে তার দ্বারা বহু মানুষ-ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর
তাইতো সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
চলবে…
ব্রেকিং