||তাপস কুমার পাল||
কিছুদিন আগে বিশেষ এক কাজে রাঙামাটি ফরেস্ট অফিস সফর করি।অফিসের এক কর্মকর্তা সাবেক ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল।নির্দিষ্ট বিষয়ে আলাপচারিতার পর প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিবাদমান পরিস্থিতির কথা।পাহাড়ের প্রসঙ্গ আসতেই বামপন্থি সংগঠনের সাবেক এই নেতা পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং এখানকার উপজাতিদের বিষয়ে তার জীবনের কিছু উপলব্ধি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হয়ে আমার কাছে শেয়ার করেন।
তিনি বলেন, ঢাবিতে অধ্যয়নকালে উপজাতি ছাত্রদের দেখলে মনের মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করতো। সাদা চামড়ার মায়াবী চেহারায় অপলক দৃষ্টিতে, অশ্রুসিক্ত নয়নে যখন বলতো পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক উপজাতিদের উপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে তখন সরকার এবং সেনাবাহিনীর উপর তিব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতাম।
নিরহংকারী ইনোসেন্ট উপজাতিদের উপর সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ভূমি দখল এবং নারী ধর্ষণের নির্মম এবং পৈশাচিক নির্যাতনের কাহিনী নিজেকে বাঙালি পরিচয় দিতেও লজ্জাবোধ করতো।
মজলুম মানবতার অর্থাৎ উপজাতীদের প্রতি সরকার, সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ত্রিমুখী কথিত নির্যাতনের প্রতিচ্ছবি যখন চোখের সামনে হাজির হত তখন দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং নিজ জাতি বাঙালির প্রতি বিদ্রোহের আগুন প্রজ্বলিত হত।
২০০৮ সালে বনবিভাগে চাকরির সুবাধে যখন রাঙামাটি আসি তখন উপজাতি সম্পর্কে মনের দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে যায়।এখানে দেখতে পাচ্ছি, ঢাবিতে যে-সমস্ত উপজাতি ছাত্ররা ভাজা মাছ উল্টিয়ে খেতে পারতো না তারাই পার্বত্য চট্টগ্রামের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী।যেই উপজাতিরা সমতলে সর্বদা রাষ্ট্র, সেনাবাহিনী এবং বাঙালিদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করতো; রাঙামাটি এসে দেখি তারাই পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড গঠন করার লক্ষে দেশ বিরোধী চক্রান্ত এবং দেশ প্রেমীক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার লক্ষে সর্বদা তৎপর।যেই উপজাতিদের অনেক নিরহ ভাবতাম এবং সার্বক্ষণিক তাদের পক্ষে কাজ করতাম তারাই রাঙামাটিতে আমাদের অফিসে এসে চাঁদা দাবি করে এবং বিলম্ব হলে হত্যার হুমকি দেয়।উপজাতিদের মূখে আজীবন শুনতাম তাদের ভূমি বাঙালিরা দখল করে নিচ্ছে রাঙামাটি এসে দেখছি উপজাতিরাই সরকারের অসংখ্য ভূমি এবং বনায়ণ জুম চাষের নামে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
মোটকথা উপজাতিদের মুখে যা শুনেছি বাস্তবে সব এর ভিন্ন।
বামপন্থি সাবেক এই ছাত্রনেতার জীবন নিংড়ানো ঘটনা থেকে সমতলের ভাইদের জন্য রয়েছে জটিল এক বার্তা।আপনারা (সমতলের ভাইয়েরা) উপজাতিদের মুখরঞ্জন কথাবার্তাগুলো কোন প্রকার বিশ্লেষন এবং যাচাই-বাচাই ছাড়া বিশ্বাস করবেন না। আপনারা (সমতলের ভাইয়েরা) যে দেশকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসেন সেই দেশের একদশমাংশ পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা জুম্মল্যান্ড নামের আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠন করতে উঠে পড়ে লেগেছে।সুতরাং পাহাড় কিংবা সমতলে যেখানেই যার অবস্থান সেখান থেকেই উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং সম্মান প্রদর্শন করুন।