আদিবাসী এমন জনগোষ্ঠীগুলোকে বোঝায়, যারা আলাদা রাষ্ট্র গঠন করতে পারেনি কিন্তু নিজস্ব একটি আলাদা সংস্কৃতি গড়ে তুলেতে সমর্থ হয়েছে। যাদের বসবাসের ইতিহাস কয়েক হাজার বছর বা যথাস্থানেই বসবাসের ইতিহাস খুুঁঁজে পাওয়া যায়নি, এমন জাতিকে আদিবাসী বলে। আর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক সংজ্ঞা ও (আইএলও) রয়েছে। যে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে আদিবাসী বনে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আমাদের দেশের উপজাতি গুলো আন্তর্জাতিক আইনের অপব্যাখা দিয়ে যদিও সেটা একটা দিবসকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা ঐ একটি দিবস ছাড়া বাকি দিবসগুলোতে ওদের দেখা যায় লুঙ্গি, পেন্ট, শার্ট কোট, ট্রাই, এমনকি থ্রি-কোয়ার্টার পড়তে দেখা যায়, নারীদের ক্ষেত্রে অবশ্য এটা ভিন্ন তাদেরকে দেখা যায় থ্রি পিস শাড়ি ব্লাউজ পড়তে ) অথচ তারাই আবার নিজেরদের আদিবাসী হিসেবে দাবি করে! এটা হাস্যকর এবং মতলববাজ গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়।
মূলতঃ আদিবাসী শব্দের সংজ্ঞা এবং রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে আদিবাসী ও উপজাতি নির্দিষ্টকরণ হয়ে থাকে। যদিও তারা নিজেদেরকে আইনের ভূল ব্যাখা দিয়ে আদিবাসী দাবি করে আসছে।
উপজাতি নামক এইসব সাদাসিধে মানুষ গুলোর হাতে হাতে আমাদের অসংখ্য সেনাবাহিনীর অফিসার খুন হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। (কারণ ১৯৭১ সালে এই সমস্ত কাজ গুলো করার জন্য দেশটা তাদের কে স্বাধীন করে দেওয়া হয়েছে )
সেখানে অসংখ্য বাঙালীদের হত্যা করা হয় এবং এইসব সাদাসিধে সহজ সরল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিরবিচ্ছন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধের কিছুকাল পর থেকেই তা জারি রেখেছে বাংলাদেশে।
পাহাড়ের বাঙালিদের প্রশ্ন : “আমার দেশ, আমার মাটি অথচ আমার নাম সেটেলার”? “এই দুঃসাহস হয় কি করে? কিভাবে এটি সহ্য করব”?
এরা “জুম্মল্যান্ড” নাম দিয়ে সেটির পতাকা করে ফেলেছে পার্বত্য চট্রগ্রামের। এদের আলাদা মুদ্রা ব্যবস্থা রয়েছে, আলাদা বিচার ব্যবস্থা করেছে। দেদারসে গাঁজা ও পপি চাষ করছে সহজ সরল সাদাসিদে সন্ত্রাসী দলগুলো, পাচার করছে মাদক, পাচার করছে অর্থ, হাত মেলাচ্ছে অন্যান্য সন্ত্রাসীদের সাথে। ( সেখানের শুধু মাত্র স্কুলগুলোতে ছাড়া আর কোথাও জাতীয় সংগীতের মর্যাদা নেই তেমনি জাতীয় পতাকাও শুধুমাত্র স্কুলগুলো মাদ্রাসাগুলো এখন কি সরকারি অফিস গুলো ছাড়া কোথাও এর তেমন মর্যাদা নেই )।
এদেরকে দমন করবার নাম-ই কি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ধর্ষক হয়ে ওঠা? সন্ত্রাসী দমন করলেই আমাদের সেনারা হত্যাকারী?
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশকে দ্বিখন্ডিত করবার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, এটাই তাঁদের পরম ও চরম দায়িত্ব। কিন্তু আপনার মাদক চোরাচালানীদের বাঁধা দিলেই কিংবা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হলেই “সেনাবাহিনী ধর্ষক” বলে এই প্রোপাগান্ডা বন্ধ হতে হবে। বলা হচ্ছে যুগ যুগ ধরে পাহাড়ে অত্যাচার করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
এই কথাগুলো যারা বলছেন, তাদের ভেতর অসংখ্য মানবতাবাদী রয়েছেন, মানবাধিকার কর্মী, এন জি ও, গবেষক, পলিটিকাল কর্মী রয়েছেন। এটা কেমন কথা কোন তথ্য প্রমাণের দরকার নেই, কোনো যথার্থতার দরকার নেই। কেবল পাহাড়ে পান থেকে চুন খসবে, আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের দিকে আঙ্গুল উঠিয়ে বলে দিলেই হয়ে গেলো?
পাহাড়েতো বাঙালির প্রতি কত অত্যাচার হয়! কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি কথিত মানবতাবাদী ব্যাক্তিদের মুখে কোনোদিন শুনতে পাইনি, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইউপিডিএফ, জেএসএস কিংবা এই রকম যেসব বিচ্ছিন্ন সাদাসিধে সহজ সরল সন্ত্রাসী দল রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে একটি উচ্চারণ। এই দলের সহজ সরল সন্ত্রাসীরা খোদ পাহাড়ের বিভিন্ন যুবকদের জোর করে বাধ্য করে তাদের দলে ভীড়বার জন্য, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করবার জন্য।
এরা নিজেদের মত করে অর্থ বা টাকা মূদ্রণ করেছে, এরা নিজেদের আলাদা সেনাবাহিনী বানিয়েছে, এরা ঐ এলাকাতে বসবাসরত বাঙালি অধ্যুষিত এলাকাতে গিয়ে ক্রমাগতভাবে মোটা অংকের চাঁদা দাবী তুলছেন , চাঁদা দিতে না পারলে তাদের হত্যা করছে, পেটাচ্ছে, কেউ আওয়ামীলীগে যোগ দিতে চাইলে, তাকে হত্যা করে ফেলে যাচ্ছে।
আমি পাহাড়ের ৩ জেলা নিয়ে যতবার পর্যবেক্ষণ করেছি, লিখেছি, বলেছি, শুনেছি, ততবারই কাতর হয়েছি এই অঞ্চলের নিরীহ মানুষগুলোর জন্য। বাঙালি, চাকমা, মারমা, মগ, মুরংসহ নানা জাতিগোষ্ঠীর নিরীহ সাধারণ মানুষগুলো আজকে সবচাইতে নিগৃহীত। সবচাইতে পশ্চাৎপদ। আর এসবের একটাই কারণ। সেটি হচ্ছে পাহাড়ে এলিট শ্রেণির আধিপত্য। এই অংশটি-ই এই অঞ্চলে টিকিয়ে রেখেছে সংঘাত, এরাই টিকিয়ে রেখেছে বিচ্ছিন্নতাবাদের দুষ্ট স্বপ্ন। আর এরাই সার্বভৌমত্বের নাম করে গরীবের একর প্রতি ৪২ পয়সা পকেটে পোরে। ২০১৮ সনে এদের নাম রাজা।
মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনকের কন্যাকে যদি প্রচল চ্যালেঞ্জে গিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতে হয়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে সে যদি “রাজা” না হন, তবে চাকমা রাজাকার ত্রিদিব রায়ের পুত্র বাংলাদেশে কেন “রাজা” হয়ে বসে থাকবেন? এ প্রশ্নের মিমাংসা করে বুঝতে হবে, পাহাড়ি প্রান্তিক সাধারণ জনতা আমাদের ভাই-বোন। সমতলের বাঙালি ফখরুল ইসলাম আর পাহাড়ের প্রান্তিক চাষী সজীব দেওয়ান, সবাই ভাই-ভাই হবে। বাঙালি আজমীর হোসাইন সিএইচটি কেন প্রেম করতে পারবেনা সবিতা চাকমার সাথে? কেন পাহাড়ি মেয়ের সাথে প্রেমকে হারাম করবে উগ্র উপজাতিরা?
আমরা হাত ধরে এগোব সামনে, এক আগামীর একটি সুন্দর বাংলাদেশের জন্য, আমরা সামনে এগোবো এই দেশকে গড়বার জন্য। যেখানে হাতে হাত থাকবে বাঙালি আর সব উপজাতির! এবং এটা যেদিন হবে, সেদিন শান্তি আসবে পাহাড়ে। শান্তি আসবে বাংলাদেশে!
|লেখক : আজমীর হোসাইন সিএইচটি| FB ID: Azmir Hossain Cht
আজমীর হোসাইন সিএইচটির ফেসবুক পোস্টের স্কিনশট কপি সংযুক্তি।
ধন্যবাদ প্রিয় ভাইয়া।