পার্বত্য সন্ত্রাসীদের লাগামহীন চাঁদাবাজি, হয়রানি নির্যাতন-নিপীড়ন খেটে খাওয়া মানুষ অতিষ্ঠ।

0

পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির সম্পর্কে লিখতে গেলে আর বলতে গেলে ১০০ টি বই লেখা যাবে তার পরেও চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজির কৃতকর্ম শেষ হবে না।
গতকাল ১১-০৩-২০২১ খ্রিঃ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯ টায় পরিচিত এক ব্যক্তির পিকআপ গাড়ি ইউপিডিএফ প্রসিত সন্ত্রাসী কবলিত এলাকার মধ্য দিয়ে একটি স্কুলে নির্মাণ কাজের জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় ইউপিডিএফ সশস্ত্র গ্রুপের ৭/৮ জন্য সশস্ত্র সন্ত্রাসী গাড়ির গতিরোধ করে! গতিরোধের কারণ জানতে চাইলে জানায়, পাহাড়ি এলাকায় গাড়ি চালাতে হলে মাসিক ও বাৎসরিক চাঁদার টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। পরিচিত ওই ব্যক্তিকে বাৎসরিক ৮ হাজার টাকা দিয়ে চাঁদার টোকেন সংগ্রহ পূর্বক যেতে হবে জানায়। অন্যথায় গাড়ি আটকে রেখে মেরে ফেলার হুমকি প্রদর্শন করে!

তাৎক্ষণিক পরিচিত ব্যক্তিও তার গাড়ির ড্রাইভার বিষয়টি আমাকে অবগত করে। তাদের কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ ছিলাম। দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, সশস্ত্র গ্রুপের এই হুমকি ও চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রবল ইচ্ছা থাকার স্বত্বেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলতে পারিনি! যার কারণ, পার্বত্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রদান করলে হিতে বিপরীত হয়। সবচেয়ে দুঃখজনক যে, সন্ত্রাসীদের তথ্য প্রদানকারীকে সবসময় কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। এবং রক্তচক্ষুর শিকার হতে হয়। সে বিষয়টি বিবেচনা রেখে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হুমকিও চাঁদাবাজির কথা জানাতে পারিনি! পার্বত্য নিয়মে চাঁদা পরিশোধ করাই লাগছে তাদের। সাধারণ মানুষ আজ পার্বত্য সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালিদের মধ্যে ১০% বাঙ্গালি দাদা বাবুদের চাটুকারিতা করে রাজনৈতিক পদ-পদবী ও চাকুরি-বাকরি করে জাতির বৃহৎ স্বার্থ বির্সজন দিয়ে আসছে। আর অধিকাংশ বাঙ্গালি নেতৃত্বহীন, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল। আর এরাই সন্ত্রাসীদের প্রধান টার্গেট। সবসময় দূর্বল মানুষ গুলোর উপর সন্ত্রাসীদের আগ্রাসী মনোভাব বেশি থাকে। যার বহিঃপ্রকাশ হয় সাধারণ উপজাতি বাঙ্গালির উপর।

পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকাংশ মানুষ খেটে খাওয়া। যার কারণ, সরকার এখানকার একটি সম্প্রদায়কে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের বৃহৎ জনগোষ্ঠী বাঙ্গালিকে পার্বত্যাঞ্চলে মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত করেছে।
সরকার ১৯৭৯ সালে পাহাড়ে বাঙ্গালি নিয়ে আসার পূর্বে গণমাধ্যমে নানান সুযোগ-সুবিধার কথা বলে বাঙ্গালিদের পাহাড়ে নিয়ে আসে। নিয়ে আসার পর সরকার সরকারের দেওয়া কথা রাখেনি। সরকারের ডিগবাজীর শিকার হয় পার্বত্য বাঙ্গালিরা। যুগের পর যুগ ধরে পার্বত্য বাঙ্গালিরা গুচ্ছ গ্রামে বন্দি। শিক্ষা, চাকুরি ও নেতৃত্ব বাঙ্গালিরা পিছিয়ে পড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সীমিত জায়গাতেই বন্দি থাকা।

উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের নির্যাতন-নিপীড়ন পাহাড়ে যেন নিত্য রুটিন কাজ। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে তারা চাঁদা দিতে হয়। সন্ত্রাসী কবলিত এলাকায় বসবাসরত যারা তারা প্রতিনিয়ত হামলা-মামলার শিকার হতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম যেন সন্ত্রাসীদের স্বর্গ্যরাজ্য। এ ভূমিতে সন্ত্রাসী দমনে সেনাক্যাম্প বৃদ্ধি করতে হবে। অরক্ষিত পার্বত্যাঞ্চলকে রক্ষিত করতে সেনা মোতায়েনের পাহাড়ে বিকল্প নেই। পার্বত্য নিয়ে এত লেখালেখি করার পরেও এদেশের সচেতন মহলের ঘুম ভাঙ্গে না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। কবে নাগাদ যে, এদেশের মানুষ পার্বত্য নিয়ে নতুন করে ভাববে তা জানি না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ থাকার স্বত্বেও নীরবতার রহস্যজনক।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More