সভ্যতার যুগেও পাহাড়ে পাহাড়ী নারীরা পরাধীন শিকলে বন্দী!

0

||এ.ম.কে আনোয়ার খাগড়াছড়ি||

মিসাই মারমা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলার মারমা সম্প্রদায়ের তরণী। পরিবার অসচ্ছল হওয়ার কারণে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে পড়ে এই মারমা তরণীর। পরিবারের ভরণপোষণের জন্য পাড়ি জমান সূদুর চট্টগ্রাম ভারী শিল্প এলাকায়। চাকরি নেন ফ্যাক্টরিতে। দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে চাকরি করার সুবাধে অনেক বাঙ্গালী সহপাঠীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার।
আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে ভোরে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম থেকে রওনা হন ছদ্মনাম মিসাউ মারমা (২২)। সাথে ছিলেন বাঙ্গালীসহপাঠী। তাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বেড়াতে যান। বাড়িতে ঘন্টা দুয়েক থাকার পর রওনা দেন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যেই। পথিমধ্যে মানিকছড়ি গভামারা নামকস্থানে স্বজাতি উগ্র সাম্প্রদায়িক যুবকদের নজরে পড়ে। উগ্রবাদীরা সিএনজি থামিয়ে তাকেসহ বাঙ্গালী যুবককে আটক করেই দু’জনকে মারধর করতে থাকে। যতদূর জানা যায়, ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে পুলিশ এসে বাঙ্গালী ছেলেটিকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দিয়ে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেন। মেয়েটিকে পুলিশ আর উদ্ধার করেননি! মেয়েটিকে নিয়ে যান অভিভাবক ছাড়া স্বজাতি উগ্র মারমা যুব সমাজের সন্ত্রাসীরা। তারা মেয়েটিকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এবং তাকে গণধর্ষণের হুমকিসহ নিলামে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ এমনই জানা গেছে একাধিক তথ্য সোর্স থেকে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি নারীদের বাঙ্গালী পুরুষদের সঙ্গে কথাবার্তা, সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, প্রেম-ভালোবাসা কিংবা বিয়ে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। উপজাতি আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর ইচ্ছেকৃত বা খামখেয়ালি ক্ষমতার এই নিয়মের কারণে পাহাড়ি মেয়েরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। পাহাড়ি সমাজে একটি সুন্দরী মেয়ে যদি আঞ্চলিকদল কিংবা সমাজে কারো কুদৃষ্টিতে পড়ে; তখন সে মেয়েকে ভোগ করতে চেষ্টা করা হয়; যদি মেয়েটি রাজি না হয় তখন তাকে বাঙ্গালীর সঙ্গে সম্পর্কের মিথ্যা তকমা দিয়ে গণধর্ষণ কিংবা নিলামসহ হত্যা করা হয়! গরিবের সুন্দর বউ সকলের ভাবী। তাই পাহাড়ি গরীব পরিবারে সুন্দরী মেয়ে থাকতে নেই।

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী নারীরা সভ্যতার যুগেও পরাধীন শিকলে বন্দী। যুগের পর যুগ ধরে নারীদের ভোগ্য পণ্য হিসেবে ব্যবহার করে পাহাড়ি পুরুষরা৷ পুরুষরা মদ-গাঁজা এবং জুয়ার আসরে মগ্ন থাকে আর নারীরা জুমে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে। নারীর কামানো টাকা মদ-গাঁজা ও জুয়ার আসরে নষ্ট করে এবং একাধিক নারী আসক্তিতে নষ্ট করে। কোন পাহাড়ি মেয়ে যদি এসবের প্রতিবাদ করে তার উপর নেমে আসে নির্যাতন ও অত্যাচার। পাহাড়ী সমাজে এসব নিয়ে কথা বলাও নাকি একধরণের পাপ!

পাহাড়ী পুরুষরা অকর্মা, মাতাল, নেশাগ্রস্ত ও মদ-গাঁজা খোর এবং একাধিক নারীতে আসক্ত৷ তাই পাহাড়ী নারীরা বাঙ্গালী পুরুষদের স্বামী হিসেবে পেতে মুখিয়ে থাকে। পাহাড়ী নারীদের পছন্দের তালিকায় বাঙ্গালী পুরুষরা। তাই অকর্মা ও মাতাল পাহাড়ী পুরুষরা পাহাড়ি মেয়েদের বাঙ্গালী ছেলেদের সঙ্গে কথা, প্রেম কিংবা বিয়ে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে এক কঠিন শাস্তির বিধান জারি রেখেছে সমাজে।

পাহাড়ি সমাজে গণধর্ষণের শাস্তি মাত্র একটি শুকর দান। যার মূল্য বা বাজার দর (২০) হাজার টাকা। শুকরের রক্ত দিয়ে ধর্ষিত মেয়েকে গোসল করিয়ে ধর্ষককে দায় মুক্তি দেওয়া হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাহাড়ি যুবকরা পাহাড়ি মেয়েদের প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে থাকে। পাহাড়ী মেয়েদের নেই স্বাধীনতা। তারা, শিক্ষা, চাকরি ও মানসিক বিকাশে পথে পথে বাধাপ্রাপ্ত। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। আঞ্চলিক সন্ত্রাসী দলগুলো এজন্য পাহাড়ি নারীদের সবসময় শিক্ষা ও চাকরি এবং আধুনিকতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

একজন নারী অন্যায় করলে তার পিতা বা সমাজ শাস্তি দেওয়ার রেওয়াজ নেই সমাজে। তথাকথিত যুব সমাজ নিষ্ঠুর প্রথার মাধ্যমে নারীটিকে ধরে নিয়ে মারধর, নিলাম ও জরিমানা করে। এমনকি গণধর্ষণ পূর্বক হত্যা করে।

একাকী একজন মেয়েকে নির্জন স্থানে নিয়ে মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে তাকে সমাজের চোখে কালি মেখে দেয়া হয়৷ তার পুরো পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়। একটি মেয়ে এবং তার পরিবার একটি কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করে।

বেশিরভাগ সময় দেখা যায় পাহাড়ি মেয়েদের উপর চালানো স্টিমরোলার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে অন্যান্য পাহাড়ি মেয়েদের বাঙ্গালীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে। যা একজন নারীর ভবিষ্যতে জীবন অন্ধকারে ধাবিত করে।

পাহাড়ের এই ভয়াবহ নারী নির্যাতন এদেশের তথাকথিত গণমাধ্যমে উঠে আসেনা। আমাদের দেশের তথাকথিত মানবাধিকার, সুশীল সমাজ ও নারীবাদীরা এই নিয়ে বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করেনা।

ভিডিও’তে যে মারমা তরণীটি আছে তাকে এখন পর্যন্ত তার অভিভাবকের হাতে তুলে দেয়া হয়নি। পাহাড়ি উগ্র যুব সমাজ মারধর ও নির্যাতনের পর আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদলের হাতে তুলে দিবে। মেয়েটির ভাগ্যে কী আছে সেটা একমাত্র সৃষ্টি কর্তায় ভালো জানেন। একজন নারীকে প্রকাশ্যে এইভাবে মারধর, হেনেস্তা করা সভ্য সমাজের কাজ হতে পারেনা। সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতেও একটি চাকমা মেয়েকে বাঙ্গালীর সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে মারধর ও সামাজিকভাবে অপদস্ত করা হয়েছে। পাহাড়ে বাড়ছে নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি সহিংসতা। যা দেখার কেউ নেই৷ hbf একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃতবাস্তবতা তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর। যার মাধ্যমে পাহাড়ের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ উঠে আসছে।

একজন মেয়ের কী স্বাধীনতা থাকতে পারেনা? বাঙ্গালী সহপাঠী থাকতে পারেনা? কে কার সঙ্গে কথা বলবে বা সম্পর্ক করবে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার বা স্বাধীনতা। এইটা বাংলাদেশ এখানে সবার অধিকার এবং স্বাধীনতা আছে। বাঙ্গালী কী কারো বন্ধু বা সহপাঠী হতে পারেনা? এজন্য একজন মেয়েকে নির্যাতন-নিপীড়ন, হেনস্তা এবং সামাজিক অপদস্ত হতে হবে? এটা কোথাকার আইন বা নিয়ম?

মারমা এই তরুণীকে বাঙ্গালীর সঙ্গে সম্পর্কের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে এবং আরো ভয়ঙ্কর কিছু তার জন্য অপেক্ষামান করছে তা কিন্তু সচেতন মহল, মানবাধিকার ও নারীবাদীদের জন্য এক লজ্জার বিষয়। এই মেয়েটিকে গোপনে লুকিয়ে কঠিন শাস্তির মুখামুখি করার হুমকি দিয়েছে উগ্র সন্ত্রাসীরা। মেয়েটির নিরাপত্তা বিষয়টি সকলেই দেখবেন, যাতে তার ক্ষতিসাধন না হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More