||তাপস কুমার পাল||
পাহাড় থেকে বাঙালি উচ্ছেদ করতে উপজাতি সন্ত্রাসীদের হাতে কমপক্ষে ৪০ হাজার বাঙালি হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেও এখনো একটি হত্যাকাণ্ডেরও সুষ্ঠ বিচার হয়নি!!
পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের অবস্থান কোন মতেই সহ্য করতে পারেনি পাকিস্তানের দালাল রাজাকার ত্রীদিব রায়।তাই পার্বত্য অঞ্চল থেকে বাঙালিদের বিতাড়িত করতে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় রাজাকার ত্রিদিব রায়ের উত্তরসূরী উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
সেই ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দেয় মানব খাদক হিসেবে পরিচিত কুখ্যাত সন্ত্রাসী জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে শন্তু লারমা।
পাহাড় থেকে বাঙালি উচ্ছেদের নানামুখী ষড়যন্ত্রের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে হত্যাযজ্ঞ, গুম,খুনকে বেছে নিয়েছে উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
পাহাড় থেকে বাঙালি উচ্ছেদ করতে আজ অবধি প্রায় ৪০ হাজার নিরহ বাঙালিকে হত্যা করেছে উপজাতি রাজাকারের দোষরেরা।
উপজাতি কর্তৃক পাহাড়ে যে কয়টি গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে তার মধ্যে আমার মুখস্থ থাকা কয়েকটি গণহত্যা নিম্নে বর্ণনা করছি।
১৯৮০ সালে বান্দরবান জেলার বন্দুকছড়ি এলাকায় শান্তিবাহিনীর নৃশংস বর্বরতায় ৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন মেজরসহ ২২ জন সৈনিককে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
১৯৮৪ সালের ৩০ মে রাতের অন্ধকারে রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া গ্রামে ৪৩৭ জন নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করে উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা।
১৯৮৬ সালের ২২ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির রামগড়ে ৩৩ জন বাঙালিকে ব্রাশফায়ার করে হত্যার পর অগ্নিসংযোগ করে শতাধিক বাড়িঘর
জ্বালিয়ে দিয়েছিলো কুখ্যাত খুনি শন্তু লারমার সশস্ত্র ক্যাডাররা।
১৯৮৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর রামগড়ের হাজাছড়া এলাকায় একই পরিবারের ৬ জনকে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
১৯৮৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর রামগড়ের বাল্টুরাম এলাকায় মালেক ভিডিপির একই পরিবারের ৪ জনকে জবাই করে হত্যা করে হত্যা করে উপজাতি নরপশুরা।
১৯৮৬ সালের ৩ অক্টোবর মাটিরাঙ্গার ওয়াচু
মৌজার অভ্যা এলাকার ১৩ জনকে গুলি করে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয় উপজাতি জংগিরা।
১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাঙামাটির লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীতে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকেকে নির্মমভাবে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
১৯৮৬ সালের ২৯ এপ্রিল মাটিরাঙ্গার
ভগবানটিলা, তাইন্দং, তবলছড়ি বাজার ও
আশপাশে অগ্নিসংযোগ ও ব্রাশফায়ার করে ৫৪
জনকে বাঙালিকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি রক্তপিপাসু শন্তু লারমার লালিত মানব খাদকরা। তাই একই
দিনে পানছড়ি এলাকার ছনটিলা,
খাগড়াছড়ি সদরের কুমিল্লাটিলা, মানিকছড়ির মলঙ্গীপাড়াসহ বিভিন্ন
এলাকায় পৈশাচিক তাণ্ডবলীলা চালিয়ে কয়েকশ’ মানুষ হত্যা করে এবং কয়েক হাজার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে মানবতার প্রতি চরম চপেটাঘাত করেছিল উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
১৯৮৮ সালের ২৬ এপ্রিল মাটিরাঙ্গা উপজেলা বর্নাল ইউনিয়নের সওদাগর পাড়া দুই পরিবারের ১০ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করে উপজাতি দানবেরা।
১৯৯২ সালের ১০এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাঙে উপজাতি সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় অসংখ্য নিরীহ মানুষ নিহত ও কয়েকশ’
ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
২০০১ সালের ২৫ জুন রামগড়ে এবং ২০০৩ সালে মহালছড়িতে কয়েকটি গ্রাম অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয় রাজকার ত্রীদিব রায়ের উত্তরসূরি উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
২০০৮ সালের ২০ এপ্রিল গঙ্গারাম মুখের
বাঘাইহাট নার্সারি এলাকায় সাতটি গ্রামে আগুন দিয়ে ১৩২টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয় উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
২০১০ সালের ১৯-২০ ফেব্রুয়ারী রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় ও ২২, ২৩
ও ২৪ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িকে শতাধিক বাড়িঘর অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয় উপজাতি সন্ত্রাসীরা, এতে বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়।
২০১৭ সালের রমজান মাসে লংগদু উপজেলার মটোরসাইকেলে চালক নয়নকে নির্মমভাবে হত্যা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
১৮ ই মার্চ ২০১৯ সালে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে নির্বাচনী সরাঞ্জমাদি নিয়ে ফেরার পথে ব্রাশফায়ার করে ৬ জনকে হত্যা করে শন্তু লারমার লালিত কুখ্যাত উপজাতি সন্ত্রাসীরা, এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে উপজাতি কর্তৃক সংগঠিত গণহত্যা সমূহের একটিরও আজও সুষ্ঠ বিচার হয়নি।বিচারহীনতার নজিরবিহীন সংস্কৃতির প্রকোপে পার্বত্য বাঙালিরা।ফলে উপজাতি সন্ত্রাসীরা তাদের হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রাখতে অনুপ্রেরণা পাচ্ছে।
সরকারের কাছে পাহাড়বাসীর দাবী উপজাতি সন্ত্রাসীদের দ্বারা যে সকল গণহত্যাসমূহ সংগঠিত হয়েছে প্রত্যেকটির সঠিক তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।