মোঃ সোহেল রিগ্যান- একটি দেশান্তরি জাতি অন্য দেশে গিয়ে আদিবাসী বনে যাওয়ার ইতিহাস পৃথিবীতে বাংলাদেশ ব্যতিত দ্বিতীয়টি আছে বলে আমার জানা নেই! বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা জাতির আদিনিবাস বলা হয় বার্মার চম্পকনগর’কে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা মঙ্গোলীয় জাতি। মঙ্গোলীয়া থেকে তারা যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বার্মার চম্পকনগর বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে চম্পকনগর থেকেও তারা দেশান্তরিত হয়ে ব্রিটিশ আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয়- প্রশ্রয় সুযোগে বসতিস্থাপন করেন। পার্বত্যাঞ্চলে তাদের বসবাসের ইতিহাস বড়জোর ৩০০ বছর। বাঙ্গালী হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধদের বাংলায় বসবাসের ইতিহাস সুপ্রাচীন, তারা সবাই বাঙ্গালী৷ আদিবাসী সংজ্ঞা অনুযায়ী ভূখণ্ডের ভূমিপূত্র যারা তারাই আদিবাসী হওয়ার দাবি রাখে। একটা দেশান্তরিত মঙ্গলীয় জাতি কীভাবে এদেশে আদিবাসী হওয়ার দাবি রাখে? বৃটিশ শাসন আমল পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিসত্বাকে উপজাতি (Tribal) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি (১৯০০ সালের হিল ম্যানুয়েল) প্রণয়ন করেছে। উপজাতিদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সামাজিক প্রথা, রাজনৈতিক আছে বলে মনে হয় না। সবইতো ব্রিটিশদের তৈরি৷ তারা আজকে যা ধারণ করছে নিজেদের বলে পরিচয় দিচ্ছে তা কিন্তু তাদের মোটেই নিজেদের নয়। সমস্যা এখানেই, এদেশের অধিকাংশ লোক উপজাতিদের মুখরোচক গল্পকাহিনী ও ইতিহাসকে খুব সহজেই বিশ্বাস করে। তাই তারা আজ আদিবাসী দাবি রাখার দুঃসাহস প্রদর্শন করে! পার্বত্য উপজাতিরা বর্তমানে বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও পশ্চিমা সংস্কৃতি ধারণ করে আছে। বস্তুত: যারা নিজেদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সামাজিক প্রথা, রাজনৈতিক ধরে রাখতে পারেনি বা যাদের এসব কিছু নেই তারা কোনভাবেই আদিবাসী সংজ্ঞায় পড়ে না। অন্য থেকে ধারকরা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, প্রথা ‘উপজাতি’ হওয়ারও দাবি রাখেনা সেখানে আবার আদিবাসী! সখ কত?
বাংলাদেশ সরকার ও বাঙ্গালীরা অন্য জাতির প্রতি উদার ও সহনশীল বলেই তো আজ উপজাতি হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তাদের দেশদ্রোহীতার সত্বেও তাদের প্রতি নমনীয়তা বজায় রেখেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে তাদের সকল দাবিদাওয়া সরকার মেনে নিয়েছে৷ উপজাতি পরিচয়ে রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগ করছে। তারা যদি সরকার ও বাঙ্গালীর এ নমনীয়তাকে দূর্বলতা মনে করে তাহলে এটা তাদের সবচেয়ে বড় ভুল। দেশভাগের বিতর্কিত আদিবাসী ইস্যু ও এর পশ্চিমা- ইউরোপীয় ষড়যন্ত্র সম্পর্কে যদি বাঙ্গালী একবার সজাগ হয় তাহলে কিন্তু জঙ্গলে বন্দী থাকতে হবে।