রাজাকারদের যুদ্ধ বিরোধিতা যারা স্বচক্ষে দেখেনি তারা কিন্তু পার্বত্য রাজাকারদের ঠিকই দেখছে!

0

পার্বত্য বাঙ্গালীদের মধ্যে একটি অংশ দালাল, মীরজাফর এবং অকৃতজ্ঞ এরা জাতি তথা রাষ্ট্রের বৃহৎ ক্ষতিসাধন করে আসছে!

৭১ এর রাজাকারদের যুদ্ধ বিরোধিতা যারা স্বচক্ষে দেখেনি তারা কিন্তু ঠিকই পার্বত্য বাঙ্গালীদের একটি অংশের রাজাকারদের বিরোধিতা দেখছে!

সরকারের দালাল আইনের তালিকা হয়তো বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই দেখেছে এবং লোকে মূখে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধিতাকারী দেশদ্রোহী রাজাকারদের কথা শুনেছে কিন্তু স্বচক্ষে তাদের কর্মকাণ্ড দেখেনি। সেসময় জন্মগ্রহণ করেনি তাই স্বচক্ষে রাজাকারদের যুদ্ধ বিরোধিতা দেখেনি। কিন্তু দেখেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালীদের মধ্যে একটি অংশকে যারা রাষ্ট্রের বৃহৎ স্বার্থ ক্ষতিসাধন করে রাজাকারি করতে ব্যস্ত। পার্বত্য বাঙ্গালীদের মধ্যে একটি অংশ দালাল এবং অকৃতজ্ঞ ও সেনাবাহিনী বিরোধী। কাঠ ব্যবসায়ী নেতা, বাঁশ ব্যবসায়ী নেতা, শ্রমিক নেতা, বাস সমিতি নেতা, ঠিকাদার এবং এই নেতা সেই নেতা এদের অধিকাংশ আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে। এরা এদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য জাতি তথা রাষ্ট্রের বৃহৎ ক্ষতিসাধন করে। এরা জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য বিপদজনক। এসব দালাল মীরজাফর দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালী তথা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকারের কথা বলতে গিয়ে এক অপ্রতিরোধ্য সংগ্রামের মুখামুখি হওয়ার মাধ্যমেই। ৭১ সালের এই রাজাকার-দেশদ্রোহীরা স্বজাতি যুদ্ধাদের আগাম খবরাখবর পাক-হানাদার বাহিনীর নিকট সরবরাহ করতো আর এই যুগের পার্বত্য বাঙ্গালী রাজাকার- দেশদ্রোহীরা উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের নিকট দেশপ্রেমিক বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীর আগাম তথ্য সরবরাহ করে। এরা যদি বাঙ্গালী আর সেনাবাহিনীর ক্ষতি সাধন না করতো পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস এতোদিন মুক্ত হয়ে যেতো। এদের কারণে সেনাবাহিনীকে পাহাড়ে প্রাণ দিতে হয়! এদের চিহ্নিত করে কেউ ব্যবস্থা নিতে গেলে তার পায়ের নিচের মাটি সরে যায়। ৭১ এর রাজাকার আর এই যুগের রাজাকারের মধ্যে এই বিষয়টি একদম সাদৃশ্য! পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসবাদী অঞ্চল। পাহাড় নিয়ে দেশ-বিদেশী ষড়যন্ত্র বহু আগে চলমান। এ চক্রান্তের অংশহিসেবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো স্বাধীনতা দাবি করে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে বাঙ্গালী ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। বিরাজমান পরিস্থিতি এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত৷ চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুন-গুমে অশান্ত পরিবেশ। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর নির্যাতন- নিপীড়নের শিকার বাঙ্গালীরা। অনেক সময় দেখা যায় সন্ত্রাসীদের হামলায় সেনাবাহিনীও নিহত হচ্ছে। এদিক থেকে এখানে বাঙ্গালীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে বলা যায়। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাঙ্গালীরা ঐকবদ্ধ হয়ে সেনাবাহিনী তথা রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে সহযোগিতা করার কথা৷ কিন্তু বাঙ্গালীদের মধ্যে একটি মীরজাফর দেশদ্রোহী, রাজাকার ও দোসর অংশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হয়ে কাজ করে আসছে। তারা ৭১ সালের রাজাকারদের মত দেশপ্রেমিক বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন খবরাখবর উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠনের নিকট সরবরাহ করে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে। চাটুকারিতা তাদের কাছে মহান পেশা মনে হয়। তারা এ অঞ্চলে রাষ্ট্রীয় স্বার্থের ক্ষতিসাধন করে সন্ত্রাসীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এরা কোনো অংশে ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের চেয়ে কম নয়। বরং তাদের অপরাধ যুদ্ধাপরাধীর চেয়ে অধিক বেশি। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ স্বচক্ষে না দেখলেও বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম যুদ্ধ দেখে আসছি। তৎকালীন স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার ও দোসরদের চেয়ে ভয়ঙ্কর হচ্ছে বর্তমানে পার্বত্য বাঙালি দালাল তথা রাজাকার’রা। এই বাঙ্গালী দালাল, রাজাকারদের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। তাদের নেটওয়ার্ক ও শক্তি-সামর্থ এত বেশি, কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়না। এ বাঙ্গালী মীরজাফর রাজাকারদের নেটওয়ার্ক পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলার ২৬টি উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এরা খুবই প্রভাবশালী এবং এলাকায় মাফিয়া৷ তাদের কথার অবাধ্য হলে বিপদ অনিবার্য৷ পার্বত্য প্রশাসন, সেনাবাহিনী তথা রাষ্ট্রীয় বাহিনী এই বাঙ্গালী দালাল রাজাকারদের চুনোপুঁটি বা হালকা মনে করে থাকে। যার কারণে দিনদিন রাষ্ট্র পার্বত্য চট্টগ্রামে লাগাম হারাচ্ছে! বাস্তবতার নিরিখে বললে এরা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী যুদ্ধাপরাধীর চেয়ে কম নয়। এমন একটা সময় আসবে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করার জন্য যখন বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীগোষ্ঠী দেশপ্রেমিক বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেছে বেছে হত্যা করবে সেই যুদ্ধে সরাসরি এই রাজাকাররা সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে৷ এরা বর্তমানে সেনাবাহিনীর সবধরনের কার্যক্রমের তথ্য সন্ত্রাসীদের নিকট পাচার করে আসছে এবং সন্ত্রাসীদের লোকাল কালেক্টর হিসেবে ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও বাঙ্গালী আন্দোলন ধ্বংসে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

উক্ত পার্বত্য যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাসময় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে অচিরেই পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি অস্বভাবিক হবে এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বে আঘাত আসবে।

লেখক: এমরান হোসেন 

তবলছড়ি, রাঙ্গামাটি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More