আঞ্চলিক পরিষদের কমপ্লেক্স নির্মাণে উচ্ছেদ সম্মুখীন তিন শতাধিক বাঙ্গালী পরিবার।

0

রাঙ্গামাটি শহরের নিকস্থ রূপনগর এলাকায় কয়েকশো বাঙ্গালী পরিবারের আবাস্থল পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নামে বন্দোবস্তো প্রদান করে। দীর্ঘবছর বসবাসকারী বাঙ্গালীরা বন্দোবস্তো না পেয়ে আঞ্চলিক পরিষদ কীভাবে বন্দোবস্তো পেলেন তা নিয়ে চলতে সমালোচনা ও প্রতিবাদ। অদ্য ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধি দল কমপ্লেক্স নির্মাণের লেআউট প্লান অনুমোদন দিতে গেলে প্রায় তিন শতাধিক বাঙ্গালী পরিবার এতে বাধাপ্রাদান করেন। এসব বাঙ্গালী পরিবারের নারী-পুরুষরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। উত্তেজনা জড়িয়ে পড়লে প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঙ্গালীদের দাবিদাওয়ার বিষয় ও অভিযোগ শুনেন। বাঙ্গালীদের প্রবল বিক্ষোভের ফলে লেআউট কার্যক্রম বন্ধ করে চলে যেতে বাধ্য হয় আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধিগণ।

বাঙ্গালীদের অভিযোগ, তারা প্রায় দুই দশকের বেশি সময় (২৫) বছর ধরে রূপনগর এলাকায় বসবাস করে আসিতেছে। একসময় জায়গাটি গভীর জঙ্গলে ঘেরা ছিল। বাঙ্গালীরা এসে জঙ্গল পরিষ্কার করে বসতিস্থাপন করে এবং বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ করে। সরকারের প্রচলিত ভূমি আইন অনুযায়ী জায়গা বা খাস জায়গাতে কোন ব্যক্তি ১২ বছর ধরে খাজনা পরিশোধ ও সরকারি নিয়মনীতি মেনে যাবতীয় কার্যক্রম করে বসবাস করলে সরকার তাকে বন্দোবস্ত প্রদান করিবে। দুঃখজনক যে, এসকল বাঙ্গালীদের উচ্ছেদ করতে পরিকল্পিতভাবে ভূমিবন্দোবস্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার শহরে নিকটস্থ রূপনগরের প্রায় তিন শতাধিক বাঙ্গালী পরিবার উচ্ছেদ সম্মুখীনের মুখে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কোনপ্রকার নোটিশ না দিয়ে বাঙ্গালীদের দখলকৃত বসতভিটায় কমপ্লেক্স নির্মাণের লেআউট দিতে আসে। যা নিয়ে বাঙ্গালীরা তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করে। এবং বলেন, আমরা যে কোন কিছুর বিনিময়ে আমাদের বসতভিটা রক্ষা করবো।

তবে বাঙ্গালীদের একটি অংশ আশঙ্কা প্রকাশ করছে, যে কোন বল প্রয়োগ করে তাদের উচ্ছেদ করতে পারে আঞ্চলিক পরিষদ৷ সরকার যেখানে বলছে দেশে ভূমিহীন থাকবে না। সেখানে পুর্নবাসন না করে এতগুলো বাঙ্গালী পরিবারকে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শনের শামিল।

স্থানীয় অধিবাসীরা মনে করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এত এতো জায়গা থাকতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কমপ্লেক্স কেন রূপনগরের বাঙ্গালীদের উচ্ছেদ করেই করতে হবে? আর কেন বা এই জায়গাটি বেছে নেওয়া হল? পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙ্গালীদের বিতাড়নের গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস নয় তো? আঞ্চলিক পরিষদের কমপ্লেক্স করতে এত বিশাল ভূমি লাগার কথা না। আর এই বিশাল ভূমি আঞ্চলিক পরিষদ কীভাবে বন্দোবস্ত পেল তা খতিয়ে দেখতে তারা প্রশাসনের কাছে বিশেষ আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদ কায়েম করা জেএসএস সন্তুর সঙ্গে অত্রাঞ্চলে শান্তিস্থাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদিত করে। চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠন হয়। আঞ্চলিক পরিষদের কার্যালয় জেলা শহরে থাকলেও রূপনগর কমপ্লেক্স নির্মাণ করে বাঙ্গালীদের উচ্ছেদ করার গভীর ষড়যন্ত্র করছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More