কাউখালী বাজার বর্জনের হুমকি, চাঁদা পরিশোধ না করায় সিএনজিতে উপজাতিদের উঠতে নিষেধ!

0

এম, এ হান্নান কাউখালী হইতে ফিরে এসে।

হিল নিউজ বিডি.কম- রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলা সদর হইতে কলমপতি একাংশ, ফটিকছড়ি সহ ঘাগড়া ইউনিয়নের একাংশের বাসিন্দাদের একমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থা কাউখালী বটতলী সড়ক পথ। গত আগস্ট মাসের ৫ তারিখে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ যানবাহন কে বাৎসরিক চাঁদা পরিশোধ করতে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে বিশাল পরিমাণ চাঁদা চেয়ে চিঠি দেয়। কিন্তু অতিরঞ্জিত চাঁদা পরিশোধ করতে অপারগতা প্রকাশ করে স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশার চালকগণ। নিধারিত সময়ে চাঁদা পরিশোধ না করার কারণেই ইউপিডিএফ হুমকি প্রদর্শন করে সাধারণ উপজাতি জনগোষ্ঠীকে কাউখালী উপজেলা হইতে বটতলী সড়কে সবধরনের সিএনজি অটোরিকশায় উঠতে কড়াকড়ি নিষেধ আরোপ করে। কেউ যদি এই নিষেধ অমান্য করে সিএনজি গাড়ি করে কাউখালী বটতলী সড়কে যাতায়াত করে তাকে হত্যা করার মতো হুমকি প্রদর্শন করে ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিটের সাব-পোস্ট পরিচালক ডি,এস চাকমা। গোপনে ও প্রকাশ্যে ইউপিডিএফ কাউখালী বাজার বর্জনের জন জনসাধারণ কে বাধ্য করার চেষ্টাও করে আসছে।

কয়েক সাপ্তাহ আগে কাউখালী উপজেলার বটতলা সিএনজি ষ্টেশন উপজাতিদের সমাগম ছিলো, মানুষের ছিলো ভিড়। বর্তমানে কাউখালী উপজেলার বটতলা সিএনজি ষ্টেশন মানব শূন্য। সিএনজি সিরিয়াল দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অলস সময় কাটাচ্ছেন চালকগণ। তাদের একমাত্র উপার্জনের পথটি ইউপিডিএফ বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে শুধু সিএনজি অটোরিকশার চালকগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, ক্ষতিগ্রস্ত হবে কাউখালী উপজেলার দোকানদার ব্যবসায়ী সহ উপজেলার সর্ব সাধারণ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশকিছু সিএনজি চালক জানান, ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ পূর্ব থেকে পরিকল্পনা করে কাউখালী সদর বাজারটি বর্জন করার পাঁয়তারা করে আসছে। তাই সহজসরল উপজাতিদের সিএনজিতে উঠতে নিষেধ করে অসাধ্য কষ্ট দিচ্ছে৷ ১০/১৫ কিলোমিটার সাধারণ উপজাতিদের পণ্য নিয়ে হাটতে বাধ্য করছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। যাতে ভবিষ্যতে কাউখালী উপজেলা সদর হইতে ৫ কিলোমিটার অদূরে মাইকেল চাকমার দোকান সংলগ্ন স্থানে বাজার বসাতে বাধ্য হয় উক্ত অঞ্চলের উপজাতিরা । এবং উপজাতিরা যেনো কাউখালী মুখি না হয়ে কাশখালীর উপরে মাইকেল চাকমার দোকান সংলগ্ন স্থানে বাজার বসাতে বাধ্য হয়। যার কারণেই পরিকল্পনা অনুযায়ী অতিরঞ্জিত চাঁদা দাবি করে বাঙ্গালী সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ করতে পাঁয়তারা করে ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ। যাতে উক্ত সড়কে সিএনজি অটোরিকশায় সহ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী যাতায়াত না করে এবং এ অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে কোন খবরাখবর প্রশাসন বাঙ্গালী-সিএনজি চালকদের মাধ্যমে না পায়, সেই ব্যবস্থা করতে ইউপিডিএফ এই জঘন্য পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা যায়।

কাশখালী বাজারের দোকানদাররা নিধারিত সময়ে চাঁদা পরিশোধ না করার কারণেই ইউপিডিএফ কাশখালী বাজার বর্জন করলেও পরবর্তীতে দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ করায় কাশখালী বাজার পূনরায় চাল করে ইউপিডিএফ এমনটা জানা যায়। তবে আরো জানা যায়, কাশখালী বাজারের প্রভাবশালী কয়েকজন দোকানদার চাঁদা পরিশোধ করে বাজার চালু করে। বেশিরভাগ দোকানদার চাঁদা পরিশোধ করে নাই, যাঁর কারণেই তাদের দোকান হইতে উপজাতিরা কেনাকাটা করে না বলে সূত্রে জানা যায়৷ কাউখালী উপজেলা হইতে শুধু মাত্র কাশখালী বাজার পর্যন্ত উপজাতিরা সিএনজিতে চলাচল করছে বলে জানা যায়।

আরো জানা যায়, এই অঞ্চলের বিভিন্ন খবরাখবর বাঙ্গালী ও সিএনজি অটোরিকশা চালকদের মাধ্যমে প্রশাসন আগাম পেয়ে থাকে। যার কারণেই বাঙ্গালী সিএনজি চালকদের উপর ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন থেকে ক্ষিপ্ত বলে জানা যায়৷

কাউখালী বাজার থেকে সাধারণ উপজাতি জনগোষ্ঠীকে অন্য মুখি করতে ইউপিডিএফ পূর্ব থেকে গোপন পরিকল্পনা করে এই সড়কে যাতায়াতরত সিএনজি অটোরিকশায় উপজাতি জনগোষ্ঠীকে উঠতে নিষেধ করে। রাঙামাটি নানিয়ারচর বাজারের মতো কাউখালী বাজার বর্জন করার মতো বিকল্প পথে হাঁটছে ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ।

স্থানীয় বাঙ্গালী ও উপজাতি রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা নিয়ে ইউপিডিএফ রাষ্ট্র বিরোধী কার্যক্রম করছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। বাঙ্গালীদের মধ্যেই একটি অংশ রয়েছে ইউপিডিএফ এর সোর্স হিসেবে কাজ করে এবং ইউপিডিএফ এর চাঁদা আদায় করে দেওয়া সহ বিভিন্ন দিক দিয়ে সন্ত্রাসীদের সহযোগী হিসেবে কাউখালী অশান্ত করছে দীর্ঘদিন থেকে তৎপর রয়েছে বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সচেতন উপজাতি জানান, ইউপিডিএফ এর হুমকির কারণে আমরা উপজাতিরা সিএনজি গাড়িতে উঠতে পারছিনা। কষ্ট করে অনেক দূর পথ হেটে কলা সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র বিক্রি করতে এবং কেনাকাটা করতে সাপ্তাহে দুইদিন কাউখালী বাজারে যায়। বর্তমানে গাড়ি ছাড়া চলতে খুবই কষ্ট হয় আমাদের। প্রশাসন সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিৎ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে উক্ত সড়কে গাড়ি যাতায়াত সহ জনপদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। না হয় ভবিষ্যতে আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না, এতোদূর হেটে কাউখালী বাজারে যাওয়া। কাউখালী বাজারটি বর্জন করতে ইউপিডিএফ পূর্বে থেকে নানান পরিকল্পনা করছেন, এবং সাধারণ উপজাতিদের ইচ্ছা মতো ব্যবহার করছেন তাদের কাজে। ইউপিডিএফ এর এসব ভাঁওতাবাজি বন্ধ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন সহ সরকারের যুগউপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন সচেতন উপজাতি মানুষটি৷

এই সড়কের স্থানীয় গাড়ি চালকদের ভিডিও বক্তব্য সংরক্ষিত রয়েছে “হিল নিউজ বিডি.কম” কর্তৃপক্ষের নিকট।

অভিযোগ এর বিষয়ে সত্যতা জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ইউপিডিএফ এর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More