উদ্ধার হয়নি কেএনএফ কর্তৃক অপহৃত রুমার সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার।

0

পার্বত্য বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে লুট, অস্ত্র ছিনতাই ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের রেশ কাটতে নাকাটতেই এবার জেলার থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা করে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে কেএনএফ, অন্যদিকে রুমার সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার দুপুর সাড়ে বারটার পর জেলার থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ৩০ জনের একটি সশস্ত্র দল ১৫ মিনিট অবস্থান নিয়ে হামলা করে। এসময় তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা ও মোবাইল নিয়ে যায়। তবে কাউকে মারধর ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় আতংকে উপজেলার সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সরকারী কর্মচারী ও স্থানীয়রা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর উপজেলাটির বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অনেকে পালিয়ে সাঙ্গু নদীর তীরে আশ্রয় নিয়েছে।

এই বিষয়ে থানচি সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার শামসুল হুদা ও কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার হ্লাচিং থোয়াই জানান, ৩০ জনের একটি দল সশস্ত্র পোষাক পরিহিত অবস্থায় এসে এই ঘটনা ঘটনায়, তবে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্রুত তৎপরতার কারনে তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।

গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ৫০-৬০ জনের সশস্ত্র দল রুমা সোনালী ব্যাংককে প্রবেশ করে। এসময় অস্ত্রের মুখে ব্যাংকের পাহারায় থাকা পুলিশ, আনসার সদস্যদের দুটি সাব-মেশিন গান ও এর ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চাইনিজ রাইফেল ও এর ৩২০ রাউন্ড গুলি এবং চারটি শর্টগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করে তারা। এসময় ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর ব্যাংকের ম্যানেজারকে উদ্ধার করা যায়নি। এই প্রতিবেদন লেখা ,পর্যন্ত থানচি ও রুমার ঘটনায় মামলা হয়নি। আর বান্দরবানে এই ধরণের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতংকের পাশাপাশি ফের আলোচনায় কেএনএফ।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন জানান, সোনালী ও কৃষি ২টি ব্যাংকে লুট হয়েছে। তবে টাকার পরিমানটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও বাজারের লোকজনদের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতি ও ১৪টি আগ্নেঅস্ত্র লুটের ১৪ ঘন্টা পার হলেও মামলা হয়নি। তবে এই ঘটনায় আজ বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

রুমা ও থানচির ঘটনার প্রসঙ্গে পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, তারা পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র নিয়েছে, ম্যানেজারকে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের সক্ষমতা রয়েছে, কোন ঘাটতি নেই, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে এই ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন বলেন, কেন এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি।

রুমায় পরিদর্শন কালে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, আমরা একটু অসুবিধায় রয়েছি, এই ঘটনার পর সিআইডিসহ সব সংস্থা একযোগে কাজ করছে, সবকিছু স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি, এখনও আতংকিত হওয়ার মতো কিছুই নেই।

এদিকে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ঘটনার পর রুমা ও থানচি উপজেলায় পর্যটকবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার অন্য ৫টি উপজেলার ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলারগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More