সরকারী ছুটিকে কাজে লাগিয়েবান্দরবানে রাতের আধারে পাহাড় কাটার মহোৎসব।

0

||বান্দরবান প্রতিনিধি||

বান্দরবানে পরিবেশ অধিদপ্তর’সহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে রাতের আধারে স্কেভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এযেন ঈদের ছুটিতে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে বালাঘাটা এমডিএস এলাকায়।

আজ শুক্রবার রাতেও জেলা সদরের এজাহার কলোনী এলাকায় স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটার দৃশ্য দেখা গেছে।ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দেখাগেছে, জেলা সদরের করুনাপুর বৌদ্ধ বিহারের পিছনের রাস্তায় এজাহার কলোনী এলাকায় স্কেভেটর দিয়ে বিশাল একটি পাহাড় কাটা হচ্ছে। ঈদের বন্ধের সুযোগে কয়েকদিন ধরেই স্কেভেটর দিয়ে পাহাড়টি কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাহাড়ের বিশাল একটি অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। পাহাড় কেটে মাটিগুলো ডাম্পার ট্রাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জলাশয় ও নীচু জমি ভরাটের জন্য।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্টদের মেনেজ করে পাহাড় কাটার কাজটি সাড়ে ৩ লাখ টাকায় চুক্তিতে কন্টাক্ট নিয়েছে দুজন স্থানীয় সাংবাদিক। তাদের একজন হচ্ছে অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিক নুচিং থোয়াই মারমা এবং অপরজন নিউজ ২৪ চ্যানেলের সাংবাদিক রতন দে শাওন। সংবাদিক পরিচয়ে এরা দুজন দীর্ঘদিন ধরে কন্ট্রাকে অবৈধভাবে পাহাড় কেটে আসছে। শুধু তাই নয়, সে বিভিন্ন সময় প্রশাসন’সহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজের কথা বলে পাহাড় কাটার জন্য জায়গার মালিকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকাও আদায় করেন। বিশাল এলাকা জুড়ে পাহাড় কাটার কারণে ধ্বংসের মুখে পড়েছে পরিবেশ। পাহাড়ের মাটি ডাম্পার ট্রাকের মাধ্যমে পরিবহনের কারনে ধুলুবালিতে ছেয়ে গেছে চারপাশ। ধুলুবালির কারনে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

এদিকে শুক্রবার রাতে পাহাড় কাটার অভিযোগ পেয়ে বালাঘাটা এলাকায় অভিযান চালায় প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব ভ্রাম্যমান আদালত। তবে অভিযানের খবর পেয়ে স্কেভেটর চালক, ডাম্পার ট্রাক’সহ জড়িতরা দ্রুত পালিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থলে পাওয়া যাওয়া স্কেভেটর স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় রাখা হয়েছে।

এজাহার কলোনীর মালিক থোয়াইহ্লাচিং মারমা বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দুজন আমার পাহাড়টি কেটে দেয়ার কন্ট্রাক নিয়েছে। সে বলেছে, প্রশাসন’সহ সবকিছু তারা মেনেজ করবে, কোনো সমস্যা হবেনা। কোনো পুলিশ, সাংবাদিকও এখানে আসবেনা।

চুক্তির বিষয়ে সাংবাদিক নুচিং থোয়াই বলেন, পাশ্ববর্তী লোকজন হওয়ায় পাহাড় কাটার কাজে সহযোগিতার কথা বলেছিলাম। সবাইকে মেনেজের কাজটি সাংবাদিক রতন দে শাওন দাদা দেখবেন বলে টাকাও নিয়েছে৷ আমার কাছে রেকর্ডও আছে। কিন্তু পরবর্তীতে পারবোনা বলে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখরুদ্দিন বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। আমাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ পাহাড় কাটলে সেটা খুবই দুঃখজনক। পাহাড় যেই কাটুক না কেন, অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবেনা।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পাহাড় কাটার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গিয়ে স্কেভেটর পেয়েছে। জড়িতদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এটি পাহাড় কাটার নিয়মিত মামলা হবে। স্কেভেটরটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় রাখা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More