ষাটোর্ধ বৃদ্ধর চোখের পানি টলটল- পাহাড়ে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে!

0

ষাটোর্ধ বৃদ্ধর অপরাধ তিনি একজন বাঙ্গালি, পাহাড়ে বাস করা তার অপরাধ!!! বাংলার ভূখন্ড পাহাড়ে বসবাস করে তার জন্য খেটে খাওয়া এই হতদরিদ্র বাঙ্গালি ষাটোর্ধ বৃদ্ধাকে কুপিয়ে আঘাত করে উপজাতি ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। গতকাল (রবিবার) ৪ এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ি ইউনিয়নের লাইফু/পংবাড়ী এলাকায় সন্ত্রাসীরা বাঙ্গালি ভূমি দখল করতে এসে হামলা চালায়। এসময় কমপক্ষে ১৫/২০ জন বাঙ্গালি আহত হয় মুসলিমপাড়া ও শুকনাছড়ির। বেশ কয়েকজন বাঙ্গালি গুলিবর্ষণ হয়।

উপজাতি সন্ত্রাসীরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলো হতে যুদ্ধে বিতাড়িত হয়ে বাংলার ভূখন্ডে আশ্রয়ে এসে আজ তারা সমগ্র রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান তাদের বলে দাবি করে। তাদের দাবি এ অঞ্চল শুধু উপজাতি থাকবে, বাঙ্গালি থাকতে পারবে না। তারজন্যেই প্রতিনিয়ত পাহাড়ে বাঙ্গালিদের হত্যা, অপহরণ ও খুন-গুম করে উপজাতি সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলো৷ অথচ এদেশীয় সুশীল, প্রগতিশীল, বাম চিন্তার মানুষ ও ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী গুলো সবসময় “দাবি করে আসছে পাহাড়ের উপজাতি গ্রুপ গুলো শান্তিপ্রিয়, তারা অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে।” প্রকৃত বাস্তবতা হল, এ সন্ত্রাসীরা কখনো জাতির অধিকারের জন্য আন্দোলন করে না। তারা যা করে তা রাষ্ট্র বিরোধীতার পর্যায়ে পড়ে। এ সন্ত্রাসীরা কতটা হিংস্র জানোয়ার তা জানতে হলে তারা দ্বারা বাঙ্গালি নির্যাতনের ভয়াবহ ঘটনা গুলো স্বচোখে দেখতে হবে। এ ছাড়া বিশ্বাস করা অকল্পনীয়। একজন ষাটোর্ধ বৃদ্ধের মুখে যারা কুপিয়ে আঘাত করতে পারে তাদের মধ্যে নূন্যতম মনুষ্যত্ববোধ থাকার কথা নয়। একজন ষাটোর্ধ বৃদ্ধের চোখের পানি টলটল করে পড়ছে। তার পরেও কেউ এগিয়ে আসেনি! পাহাড়ে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। এ রকম অহরহ ঘটনা প্রতিনিয়ত বাঙ্গালির সাথে হচ্ছে৷ এখানে বাঙ্গালি হত্যার বিচার হয়না। বাঙ্গালি নির্যাতন হলে প্রতিকার নেই। এখানে অপরাধীর শাস্তির কামনা করতে গিয়ে ভিকটিম লাঞ্ছিত হতে হয়। এরই নাম পার্বত্য চট্টগ্রাম৷ এ ভূখণ্ডে বাঙ্গালি হিসেবে জন্ম নেওয়া এক অভিশাপ। এখানকার বাঙ্গালি নির্যাতনের ভয়াবহ করুণ চিত্র এদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়না। যুগের পর যুগ ধরে পাহাড়ে বাঙ্গালি নির্যাতন- নিপীড়ন ও অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করে যাচ্ছে। বাঙ্গালিদের কোন শক্তিশালী প্রতিনিধি নেই৷ বাঙ্গালির পক্ষে কথা বলার মতো এবং বাঙ্গালি নির্যাতনের বিষয় গুলো সহ সন্ত্রাসীদের অপরাধ দেশের মানুষের কাছে উন্মোচন করার মতো কেউ নেই। কেউ যদি বাঙ্গালির পক্ষে কথা বলে তাকে দমিয়ে দেওয়া হয়, না হয় নিঃশেষ করে দেওয়া হয়। রাস্ট্রীয় মৌলিক অধিকার হতে এখানকার বাঙ্গালিরা বঞ্চিত৷ এখানে শুধুমাত্র উপজাতিদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে এবং তাদের অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। একপ্রকার বলতে গেলে পার্বত্য বাঙ্গালির সঙ্গে সবকিছুতেই বৈষম্য করা হয়েছে। বাঙ্গালিরা শিক্ষা, চাকরি, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে উপজাতি জনগোষ্ঠীর মানুষদের চেয়ে হাজার গুণ পিছিয়ে আছে। বাঙ্গালিরা রাস্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার৷ রাস্ট্র পার্বত্য বাঙ্গালিদের দেওয়া কথা রাখেনি। শুধুমাত্র বাঙ্গালিদের রাস্ট্রের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়েছে এবং হচ্ছে। রাস্ট্র পার্বত্য বাঙ্গালি জনগণকে ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনিই খেলেছে। যার কারণে পার্বত্য বাঙ্গালিরা নিজ দেশে পরবাসী।

সরকার ১৯৯৭-এর পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের সব দাবিদাওয়া মেনে নেয়। মেনে নেওয়ার পরেও সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্র ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেনি। এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করছে৷ প্রতিবেশী দেশগুলো হতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইন্দোনেশিয়ার পূর্বতিমুর ও দক্ষিণ সুদানের মতো অবিকল রাষ্ট্র গঠন করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। পাহাড় থেকে বাঙ্গালি উচ্ছেদ করার জন্য বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে নানান কুৎসা রটানো করে যাচ্ছে এ সন্ত্রাসীরা। প্রতিনিয়ত বাঙ্গালিদের উপর নৃশংস হামলা চালাচ্ছে। নির্বিকার এখানকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথা ব্যবস্থা না গ্রহণ না করার কারণে এবং রাষ্ট্রের উদাসীনতার ফলে পাহাড়ের বাঙ্গালিরা স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশে ভিনদেশী দখলদার কর্তৃক হামলার শিকার হয়ে আসছে। ৩৮ হাজার পার্বত্য বাঙ্গালিকে উপজাতি সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। তার কোনটিরই বিচার হয়নি। যার কারণে সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া ভাবে বাঙ্গালিদের উপর হামলা অব্যাহত রেখেছে।

লেখক, শেখ ফরিদ মাহমুদ, খাগড়াছড়ি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More