পার্বত্য চুক্তির বিরোধিতাকারী ইউপিডিএফ কেন চুক্তির দোহাই দিয়ে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে?

0

১৯৯৭ সনের পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার ঠিক এক বছর পর ১৯৯৮ সনের ২৬ শে ডিসেম্বর ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে চুক্তির বিরোধিতা করে প্রতিষ্ঠা যাত্রা শুরু করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর তাদের বিভিন্ন ধ্বংসাত্মকমূলক কর্মসূচি থেকে তাদের দাবি ‘পূর্ণস্বায়ত্তশাসন’ একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান। এমন দাবির স্লোগান ও ফেস্টুন পাহাড়ের চিপা চাপায় এখনো দেখা যায়৷ ১৯৭২ সনে ঘটিত তথাকথিত শান্তিবাহিনী পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি করে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৯৭ সনে পার্বত্য চুক্তিতে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি থেকে সরে আসে।
ইউপিডিএফ পার্বত্য চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে বারবার বাঙ্গালী উচ্ছেদ ও পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি জানিয়ে আসছে আর পার্বত্য চট্টগ্রামে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরীহ হাজারো উপজাতি-বাঙ্গালীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। অনেক মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করে৷ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে অবৈধ অস্ত্রের জোর দেখিয়ে ইচ্ছে মত চাঁদা উত্তোলন করে বিলাসী জীবনযাপন করছে৷
সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফের নেতা সমাজ প্রিয় চাকমার বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকা দুনীর্তির অভিযোগ উঠে৷ এতে প্রতিয়মান হয়, ইউপিডিএফ মানুষ থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে নিজেরা মোটা তাজা হয়েছে৷ চাঁদাবাজির এসব টাকা ভাগ বন্টন নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বও চরমে। বেশিরভাগ হানাহানি ও রক্তপাতের ঘটনা মূলত এই কারণে ঘটে।
ইউপিডিএফের সাধারণ সদস্যদের বঞ্চিত করে শীর্ষ সারির বেশ কয়েকজন নেতা চাঁদাবাজির টাকা দুর্নীতি ও আত্মসাৎ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম বাড়ি করে বিলাসী জীবনযাপন করছে৷ এটা সাধারণ সদস্য ও কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে চরম বেইমানি।

সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী যখন ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে এবং তাদের অনিয়ম-অবিচার ও নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানুষ যখন মুখ খোলা শুরু করেছে ঠিক তখনই ইউপিডিএফ পার্বত্য চুক্তির দোহাই দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের দাবি তোলে! অথচ এই ইউপিডিএফ পার্বত্য চুক্তির অন্যতম বিরোধিতাকারী। যারা নিজেদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম গতিশীল করতে, এবং নিজেদের অপকর্ম দামাচাপা দিতে বারবার চুক্তির দোহাই দেয়।

ইউপিডিএফ যদি অস্বীকার করে যে, তারা চুক্তির বিরোধী নয়, তাহলে তারা কেন ২০১৬ সালের পূর্বে জেএসএস চুক্তি পক্ষের সদস্যদের হত্যা করলেন??

একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে ইউপিডিএফের নিকট আমাদের ৬টি প্রশ্ন-

১. ইউপিডিএফ যদি চুক্তির পক্ষে থাকে তাহলে তারা কেন এই ২৩টি বছর চুক্তির বিরোধিতা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে??

২. তারা কেন চাঁদাবাজি অপহরণ ও খুন-গুম অব্যাহত রেখেছে?

৩. তারা কেন প্রতিনিয়ত স্বজাতি হত্যা করছে?

৪. তারা কেন রাস্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজের বিরোধিতা করছে?

৫. তারা কেন রাস্ট্রীয় স্থাপনা ও রাস্ট্রীয় বাহিনীর হামলা করছে?

৬. তারা কেন পর্যটকদের উপর হামলা করছে?

উপর্যুক্ত বিষয়গুলো বিচার বিশ্লেষণ করলে প্রতিয়মান হয় যে, ইউপিডিএফ পার্বত্য চুক্তি বিরোধী, এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি সম্প্রীতি বিনষ্টকারী।

একটি তথ্য দিয়ে রাখি-
ইউপিডিএফ নেতাদের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও আত্বীয় স্বজনদের চুক্তির কোটার মাধ্যমে সরকারি চাকরি নিয়ে দিচ্ছে কিন্তু ইউপিডিএফ ! এখানে একটি হাস্যকর বিষয় হল- ইউপিডিএফের কাছে পার্বত্য চুক্তি হারাম কিন্তু চুক্তির কোটা ও সুযোগ-সুবিধা হালাল! এই থেকে স্পষ্ট যে, ইউপিডিএফ একটা ভাঁওতাবাজ ও সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ সংগঠন৷ তাদের মুখোশ উন্মোচিত। তাদের অপকর্ম ও অসৎ উদ্দেশ্য ইতোমধ্যে পার্বত্যবাসী জেনে গেছে। তারা যতই অধিকারের বাণী প্রসব করুক না কেন তা পার্বত্যবাসী প্রত্যাখান করবেই।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More