শিক্ষা ব্যবস্থাকে কবর রচিত করতে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর!

0

পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায়-অবিচার, বৈষম্য ও উপজাতি কোটার কারণেই দিনদিন পার্বত্য বাঙ্গালীরা পিছিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর মরার উপর খাড়ার ঘা। পার্বত্য চট্টগ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে কবর রচিত বা ধ্বংস করতে গত ১৩ জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহম্মেদ স্বাক্ষরিত স্মারক নম্বর: ৩৭.০২.০০০০.১০১.১৯.০০৪,২৩,১৯৪৬ মূল্যে ‘বিষয়: জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ পার্বত্য জেলা পরিষদ হস্তান্তর চুক্তি কার্যকর সংক্রান্ত।’ চিঠি সুত্র: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০১১.০ (অংশ)-০৬, তারিখ: ২৬.০১.২०২৩ খ্রিস্টাব্দ মতে হস্তান্তর করা হয়।

উপযুক্ত বিষয় ও সূত্রের প্রেক্ষিতে গত ২৬.০৫.২০১৪ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যানের মধ্যে কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট পার্বত্য জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণের হস্তান্তরের চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। (কপি সংযুক্ত )।

এমতাবস্থায়, উক্ত চুক্তিপত্র প্রদান বাস্তবায়নের নির্মিত সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো হলো। এই মর্মে পার্বত্য তিন জেলা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিতরণ কপি ও অনুলিপি প্রয়োজনীয় কার্যার্থে প্রেরণ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। উপরোক্ত স্মারক মূল্যে গত ১৪ জুন ২০২৩ খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা অফিসার (অ: দ:) এস এম মোসলেম উদ্দিন কর্তৃক স্বাক্ষরিত অনুলিপি সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় কার্যার্থে বিতরণ করেন, গত ১৮ জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে তার অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয়গুলোকে।


তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণ চুক্তিপত্র একই। তাই লেখা না বাড়িয়ে শুধুমাত্র খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাধ্যমিক শিক্ষার কার্যক্রম খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত বিষয়বস্তু তুলে ধরা হলো।

যেহেতু খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ২১ নং আইন) এর ২২ ধারা এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ১১নং আইন) এ বর্ণিত ১ম অনুযায়ী সরকার কর্তৃক পরিচালিত মাধ্যমিক শিক্ষার কার্যক্রম খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করিতে সরকার ইচ্ছা প্রকাশ করিয়া

এবং যেহেতু সরকার ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মধ্যে এই বিষয়ে আলোচনা হইয়াছে এবং উক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরি মিক শিক্ষা কার্যক্রম নিম্নবর্ণিত শর্তসাপেক্ষে গ্রহণ করিতে সম্মত হইয়াছেঃ

সেহেতু সরকার উপরি উক্ত আইনের ২৩(খ) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্মতিক্রমে এ জেলায় অবস্থিত সকল সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্ম ও বিষয়গুলো খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণে নিম্নলিখিত শর্তাধীনে হস্তান্তর করিল।

কার্যাবলি (ক)

মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন, পরিচালনা, তত্ত্বাবধান, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ: উন্নয়নের জন্য স্থানীয়ভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন
সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ ও সাধারণ পাঠাগার স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষণ।
ছাত্র-ছাত্রীর বৃত্তির ব্যবস্থা ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ
মাধ্যমিক শিক্ষক/শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের জন্য
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক প্রাপ্ত
গরীব ও দুঃস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বা সেকৃত মূল্যে পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সরঞ্জাম বিতরণ:
সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ও তাসামুলক ব্যবস্থা
গ্রহণ ইত্যাদি।
মাধ্যমিক শিক্ষার আওতাধীন জেলা ও উপজেলার সকল সরকারি কার্যালয় এবং সকল মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিষদের চেয়ারম্যান/চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত সদস্য/কর্মকর্তা পরিদর্শন করিতে পারিবেন। তবে পরিদর্শনের জন্য মনোনীত কর্মকর্তার পদমর্যাদা কোনক্রমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিম্নে হইবে না;
এবং সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যাদি।
কর্মকর্তা, কর্মচারী, সম্পত্তি ইত্যাদি।
জেলা শিক্ষা অফিসার ও তাহার কার্যালয়ের অন্যান্য অফিসার ও কর্মচারী:
জেলার সকল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মচারী।
জেলার সকল বেসরকারি মাধ্যনিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা/কর্মচারী;
সরকারি, বেসরকারি, দেশী-বিদেশী সংস্থার সহযোগিতার পরিচালিত আবাসিক-অনাবাসিক, মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষক/শিক্ষিকা /কর্মচারী। মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রকল্পের অধীনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী;
উল্লিখিত অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের ভবন, যানবাহন, স্থাবর, অস্থাবর সম্পদাদির মেরামত, সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ উন্নয়ন এবং এতদসম্পাদানি হইতে প্রাপ্ত আয় জেলা পরিষদ তহবিলে জমা হইবে।
উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়াদি সরকার পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর করিবে।

শর্তাবলী:

জেলা শিক্ষা অফিস।
সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন-ভাতাসহ কার্যালয়ের অন্যান্য ব্যয় এবং পরিষনের মাধ্যমে বাতায়নযোগ্য উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়/অধিদপ্তর/কর্তৃপক্ষ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান করিবে।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতানিসহ বাজেটে বরাদ্দকৃত অন্যান্য প্নের অর্থ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষনে প্রদান করিবে।

মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের এম.পি.ও. ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা / কর্মচারীদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশসহ বাজেটে বরাদ্দকৃত অন্যান্য ব্যয়ের অর্থ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকূলে প্রদান করিবে।

সরকারি-বেসরকারি, দেশী-বিদেশী সংস্থার সহযোগিতায় পরিচালিত মাধ্যমিক / নিম্নমাধ্যমিক / আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষক/শিক্ষিকা/কর্মচারীর বেতন-ভাতা ও অন্যান্য খরচের অর্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরকারি বিধি মোতাবেক খাগড়াছড়ি স্বার্থভা জেলা পরিষদের অনুকূলে প্রদান করিবেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও অফিসের অন্যান্য কর্মচারীর বেতন-ভাতাদি ও অন্যান্য ব্যয়ের অর্থ ও উপবৃত্তির জন্য

প্রমুখ অর্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকূলে প্রদান করিবে।

সাধন করিবে।

পরিষদ সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল কর্মকান্ড তদারক, তত্ত্বাবধান

পরিখা সরকারের প্রচালিত প্ৰৰিধি/নীতিমালা/বিধি-বিধান অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি গঠন, স্থগিত এবং বাড়িল করার অধিকার সংরক্ষণ করিবে।
নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ও মূলা

জেলা শিক্ষা অফিস ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যাশয়। জেলা শিক্ষা অফিস ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তা ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ও মা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের এতদসংক্রান্ত সরকারি বিধি/প্রবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হইবে।

প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা/শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মচারীগণকে সাধারণত জেলার বাইরে বদলি করা যাইবে না। তবে সরকার প্রয়োজনে জনস্বার্থে বদলি করিতে পারিবে।

জেলা পরিষদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকা-কর্মচারীদিগকে জেলার অভ্যন্তরে এক সরকারি বিদ্যালয় হইতে অন্য সরকারি বিদ্যালয়ে বদলি করিতে পারিবে। বেসরকারি মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশিক্ষণের

জন্য মর্মোনয়ন ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সকল সিদ্ধান্ত পরিষদকে অবহিত করিতে হইবে।

নৈমিত্তিক ছুটি।

পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে তাহার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি/কর্মকর্তা (যিনি আবেদনকারীর কর্মকর্তার নিম্ন পর্যগায়ের কোন কর্মকর্তা হইবে না) জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা/প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকা, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এর নৈমিত্তিক ছুটি ম করিবেন। অন্যান্যদের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রচলিত নীতি বহাল থাকিবে।

অর্জিত ছুটি

সরকারি প্রচলিত নিয়ম বহাল থাকিবে। তবে এতদসংক্রান্ত আবেদনপত্র ও অন্যান্য ফাণালয় পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন

জেলা শিক্ষা অফিসার / সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকা এর বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন পরিষদ চেয়ারম্যান লিখিবেন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিস্বাক্ষরের জন্য প্রেরণ করিবেন।

অন্যান্য কর্মকর্তা/শিক্ষক/শিক্ষিকা/কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম বহাল থাকিবে।

পার্বত্য জেলা পরিষদ জেলার অভ্যন্তরে মাধ্যমিক শিক্ষা বিষয়ক উপরের অনুচ্ছেদে বর্ণিত “কার্যাবলি” বাস্তবায়নের জন্য সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা/প্রকল্প জেলা শিক্ষা অফিসার/সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান কমিটির সহায়তার সরকারি বিধিমতে এখনে, গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করিবে।

জাতীয় পর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা বিষয়ক উপরের
অনুচ্ছেদে বর্ণিত “কার্যাবলী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর পরিমনের

মাধ্যমে বাস্তবায়ন করিবে।

বিদেশী সাহায্য সংস্থা কর্তৃক কর্ম/বিষয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বা কর্মসূচি সরকারের অনুমোদনক্রমে জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে বাস্তবায়িত হইবে।

চুক্তি সংশোধন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে চুক্তিতে বর্ণিত শর্তসমূহ প্রয়োজনবোধে পর্যালোচনাপূর্বক জনস্বার্থে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এই চুক্তি পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন ও সংযোজন করিতে পারিবে।

চুক্তি বাস্তবায়নের এবং ইহার ব্যাখ্যার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মধ্যে কোন মত পার্থক্য দেখা দিলে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সরকার তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিকট পেশ করা হইবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় উক্ত বিষয়ে মত পার্থক্য নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষনের সহিত আলোচনাক্রমে প্রয়োজ পদক্ষেপ / চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।

অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

কোন অংশ (শর্ত, ধারা, উপ-ধারা) অসামঞ্জস্যপূর্ণ হইলে তাহা সংশোধনযোগ্য মৰ্মে গণ্য হইবে।

চুক্তিনামায় যে সব বিষয় বর্ণিত বা অন্তর্ভুক্ত হয়নি, সে সব বিষয় সরকারের বিদ্যমান ও প্রযোজ্য আইন/বিধি/বিধিমালা খাগড়াছড়ি পার্বত্য মেশা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন ১৯৮৯ এবং এর অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইন এর সাথে এ চুক্তির

এ চুক্তি অন্য ২৬ মে, ২০১৪ খ্রি. / ১২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২১ বাংলা হইতে কার্যকর হইবে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ হইতে তৎকালীন চাইথো অং মারমা, চেয়ারম্যান, চুক্তিপত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলির উপরে বর্ণিত শর্তে স্বাক্ষর করেন। এবং যাচাই-বাছাই বা পর্যাবেক্ষণ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ (সরকারি মাধ্যমিক-১) এর পক্ষ হইতে মোহাম্মদ আলমগীর সিনিয়র সহকারী সচিব।

উপরোক্ত সবকিছুই পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ৯ লক্ষ বাঙ্গালী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন এবং পদে পদেই বৈষম্যের শিকার হবেন। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামে সবকিছুই উপজাতি কোটা ভিত্তিতে হয়। ১৯৯৭ সনের ২-রা ডিসেম্বরের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণ উপজাতি নেতৃত্বশ্রেণীর হাতে। এই পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যের বেশিরভাগ উপজাতি জনগোষ্ঠীর নাগরিকদের নিশ্চিত করা হয়েছে। যার কারণে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করার কারণে এখানকার বাঙ্গালীরা নিয়োগে এবং শিক্ষা অর্জনে বৈষম্যে শিকার হবেন নিঃসন্দেহে বলা যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির শর্ত অনুরূপ পূর্বে শুধুমাত্র প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ছিল পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতায় এবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাও জেলা পরিষদের আওতায় চলে গেছে। এভাবেই একদিন আস্তে আস্তেই সবকিছু উপজাতিদের হাতে চলে যাবে। সেদিন আর বেশি দূর নয়। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অধিকাংশ ধারা-উপধারা বাংলাদেশ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক এবং এই চুক্তির মাধ্যমে সংবিধানকে অবমাননা করা হয়েছে। এই চুক্তিতে বাঙ্গালীদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালীদের এই চুক্তিতে অবজ্ঞা করা হয়েছে এবং একতরফাভাবে উপজাতীয়দের আধিপত্য বিস্তার হয়েছে।

আমরা সকলেই জানি পার্বত্য তিনটি জেলা পরিষদ ইতোমধ্যে নিজেদের অবস্থান কলঙ্কিত করেছে। তাদের নিকট হস্তান্তরিত বিভিন্ন বিভাগ বা দপ্তরে নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এবং পরিচালনায় অদক্ষতা ও দুর্নীতির ভয়ঙ্কর চিত্র ফুটে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার গোড়াপত্তন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাকে পার্বত্য তিনটি জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করে কবর রচিত করা যেমন হয়েছে তেমনি চিরতে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশকে ধ্বংস করা হয়েছে। বৈষম্য, অনিয়ম ও সাম্প্রদায়িকতার চিরচেনা পার্বত্য জেলা পরিষদ এখন দুর্নীতি আখড়ার পরিণত হবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে একচেটিয়া উপজাতীয়দের প্রাধান্য দেওয়া হবে। পূর্বে তো সরাসরি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগের নিকট থাকার কারণে শিক্ষক নিয়োগে পাহাড়ি-বাঙ্গালী ভেদাভেদ বা এতটাই বৈষম্য ও অনিয়ম করা হয়নি এবং শিক্ষার মান যথার্থ ছিল। কিন্তু বর্তমানে দুর্নীতির আখড়ায় হস্তান্তর করার কারণে এখানকার শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ নষ্ট হবে এবং উপজাতীয়দের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার মান তলানিতে নিবে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিতর্কিত ধারা-উপধারা বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলুন এবং অসাংবিধানিক বিধিবিধান সংশোধন পূর্বক পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হোক। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির প্রথম পক্ষ সরকার, দ্বিতীয় পক্ষ সন্তু লারমার পিসিজেএসএস। দ্বিতীয় পক্ষ বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক নয়। যে অভিযোগ এতোদিন ধরে করে আসছিল তা আজ উক্ত বিভাগ হস্তান্তরিত করার মাধ্যমে মিথ্যে প্রমাণিত হলো।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More