কখনো স্বায়ত্তশাসন আবার কখনো কেটিসি আসলে কি চায় কেএনএফ? তাদের উদ্দেশ্য কি?

0
10

||রুহুল আমিন তৌহিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি||

স্বায়ত্তশাসন বা স্ব-শাসন বা নিজ-শাসন হল একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী, যার কোনো বহিরাগত কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণের সমস্ত প্রয়োজনীয় কার্য সম্পাদন করার ক্ষমতা রয়েছে। শুরু থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বায়ত্তশাসিত পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছিল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। নয়টি উপজেলা নিয়ে তারা পৃথক রাজ্য গঠন করতে চাচ্ছিল। এবার সেই দাবি থেকে সরে এসেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র এ গোষ্ঠী। তারা ওই অঞ্চলের সাতটি উপজেলা নিয়ে ‘স্বশাসিত পরিষদ’ প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছে।
‘কুকি-চিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল’ নামে একটি পরিষদ গঠন করতে চায় এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। যার মাধ্যমে এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখতে চায়। এছাড়া কুকি-চিন আর্মড ব্যাটালিয়ন (কেএবি) নামে একটি সশস্ত্র বাহিনী করার দাবিও জানায়। তাদের অনেকগুলো দাবি রয়েছে যা বাংলাদেশ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ইতোপূর্বে তারা বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে আতাত করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছেন।
এটি থেকে প্রতিমান হয় যে তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

এ ছাড়া তারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার মাধ্যমে নিজেদের দাবী আদায় করতে চাওয়া খুবি লজ্জা জনক কাজ এটি কখনোই মানার মতো নয়। এবং রাষ্ট্রের সম্পদ ডাকাতি ও লুটপাট করার মতো দূরসাহসিকতা দেখিয়ে নিজেদের আরো রাষ্ট্র বিরোধী প্রমাণ করেছে।

শুরুতে তারা স্বায়ত্তশাসন দাবি জানালেও যখন বুঝতে পারে এই দাবি বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং তা কোনভাবেই রাষ্ট্র মেনে নিবে না। তাই এই দাবি থেকে সরে এসে ‘টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল’ এর মাধ্যমে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সে একই দাবি উত্থাপন করে।

স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা হলো- আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার। যাকে পূঁজি করে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করা যায় খুব সহজেই। জাতিসংঘ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মানুষের অধিকার সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইন করেছে। যার মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারান ওই দেশের কেন্দ্রীয় সরকার। আর ‘টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল’ এর মাধ্যমে একটি অঞ্চলের সবধরনের নিয়ন্ত্রণ ওই জনপদের হাতে ন্যস্ত হয়। যারমধ্যেও ধীরে ধীরে নিজেরা শক্তিসঞ্চারণ করে একটা সময় বিচ্ছিন্নতাবাদ বা আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতায় আলাদা রাষ্ট্র গঠনের দিকে যায়।

মূলত তাদের দাবি-দাওয়ার অন্তরালে রয়েছে, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের
বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি নিয়ে পৃথক প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রণয়নসহ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল দেওয়ার। এই অঞ্চলের নামও তারা দিয়ে দেয়, ‘কুকি-চিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল’ বা কেটিসি। এ উপজেলাগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা কুকি রাষ্ট্র গঠন। প্রাথমিকভাবে তারা কুকি রাজ্য দাবি করলেও এর অন্তরালে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের আভাস পাওয়া যায়। তাদের এ দাবির জন্য সশস্ত্র গেরিলা সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা নেই। এই অল্প সংখ্য জনগোষ্ঠীর জন্য এতসব দাবিদাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্দেশ্যপ্রণীত। কোন একটি গোষ্ঠী কিংবা মহলের ইন্ধনে তারা এই অসাংবিধানিক এবং রাষ্ট্র ভাগ করার দাবিদাওয়া তোলে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে। এ থেকে দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে না হয় তারা রাষ্ট্রের বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াবে।

আগের পোস্টজনশ্রুতি আছে কেএনএফ প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের পৃষ্ঠপোষকতা ছিলেন সন্তু লারমা!
পরের পোস্টনিজ সম্প্রদায়কে বিপদে ফেলে বিদেশে পলায়নরত নাথান বম।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন