পার্বত্য চট্টগ্রাম নিরাপত্তা বিষয়ে সরকারকে পূর্ণমূল্যায়নের প্রয়োজন।

0

||অপূর্ব সাচিং||

পার্বত্য চট্রগ্রাম বাংলাদেশের আয়তনের এক দশমাংশ ভূখন্ড। ১৭.৫ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ দেশের এক দশমাংশ পার্বত্য চট্রগ্রামে এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ লোকের আবাস হওয়ার কথা থাকলেও এখানে ১৩ টি উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ৮ লক্ষ উপজাতি ও ৮.৫ লক্ষ বাংঙ্গালী লোক বসবাস করছে ।
পার্বত্য চট্রগ্রামে ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)সহ তিনটি পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠণ বিভিন্ন বহিরা বিশ্বের প্রত্যক্ষ মদদে এবং প্ররোচনায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য এক দশমাংশ ভূখন্ড পার্বত্য চট্রগ্রামকে আলাদা ভাবে জুমল্যান্ড করার উদ্দেশ্যে উপজাতীয়দের দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সশস্ত্র সন্ত্রাস পরিচালনা করে দেশ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। যা দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বিশাল হুমকি। এর থেকে বাচার জন্য বর্তমান প্রচুর পরিমানে নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রয়োজন। যা রাস্ট্রের পদক্ষেপ নেয়া খুবি জরুরি। এতে প্রতিবন্ধতা হলো পার্বত্য চুক্তি, চুক্তিতে নিরাপত্তা ক্যাম্প সরিয়ে নেয়ার কথা থাকায় সরকার তা করেছে। আর চুক্তিতে ৬টি স্থায়ী সেনানিবাস স্থাপনের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেই সেনানিবাসগুলোর ফর্মেশনের কথা শান্তিচুক্তিতে স্পষ্ট করে বলা নেই। এই ৬টি স্থায়ী সেনানিবাস কীরূপে সেখানে অবস্থান করবে- ডিভিশন আকারে, ব্রিগেড আকারে না ব্যাটালিয়ন আকারে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা নেই। এই অপশনটি রাষ্ট্রের হাতে রয়ে গেছে। রাষ্ট্র প্রয়োজন মতো তা ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে তিন জেলা সদরে তিনটি ব্রিগেড রয়েছে। এর বাইরে খাগড়াছড়ির গুইমারায় আরেকটি ব্রিগেড রয়েছে। কাপ্তাই ব্রিগেডটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। শান্তিচুক্তির শর্ত পালনে গুইমারা ব্রিগেড দিঘীনালায় সরিয়ে নিলেও আলীকদম ও রুমাতে দুইটি নতুন ব্রিগেড প্রতিষ্ঠার সুযোগ রয়েছে।যা এখনো করা হয়নি। তবে শান্তিচুক্তির মধ্যেই সমাধান খুঁজলে এ চুক্তির ঘ খন্ডের ১৭(ক) ধারা গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। এই ধারায় যেমন স্থায়ী সেনানিবাসের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা হয়নি। তেমনি অস্থায়ী সেনানিবাসের সংজ্ঞা ও দেয়া নেই। অর্থাৎ অস্থায়ী সেনানিবাস বলতে ব্রিগেড, ব্যাটালিয়ন/ জোন, সাবজোন, কোম্পানি স্থাপনা নাকি সেনা আউট পোস্ট বোঝানো হবে তার কিছুই চুক্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এই ব্যাখ্যাটা ও রাষ্ট্রের হাতে রয়েছে এবং রাষ্ট্র চাইলে প্রয়োজন মতো ব্যবহার করতে পারে। ব্যাটালিয়নগুলো আবার গড়ে ওঠে কতকগুলো সাবজোনের সমষ্টিতে। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, এই জোন, সাবজোনগুলো কোথায়, কীভাবে অবস্থান করবে? শান্তিচুক্তিতে এ বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা নেই।
দেশের রাস্ট্রীয় বিধানমতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশেষ বাহিনী দ্বারা নিরাপত্তা দেয়ার কথা রয়েছে। আর ঝুকিপূর্ণ স্থানে চাহিদার চেয়ে বেশি সৈন্য দিয়ে নিরাপত্তা দেয়ার কথা । কিন্তু পার্বত্যের ক্ষেত্রে তা ভিন্নতা দেখা যায়, পার্বত্য চুক্তির কারণে । আর প্রয়োজন মতো নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে যেকোন সময় রাস্ট্রের জন্য এটি হুমকি হয়ে দাড়াতে পারে। যা বর্তমান সময়ে পাহাড়ে বিরাজমান দৃশ্য ।

নির্ধারিত শর্তাবলীর আলোকে পার্বত্য চট্রগ্রাম চুক্তি নামক ২রা ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে, আওয়ামী লীগ সরকার ও জেএসএস (সন্ত্রাসী তথাকথিত শান্তি বাহিনী) এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন বর্তমান সরকার পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদল্লাহ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদৈর পক্ষে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের পক্ষে সন্তু লারমা চুক্তিতে কীভাবে সই করেছেন তা আওয়ামী লীগ সরকার জানেন। তবে একথা ষ্পষ্ট যে, সন্তু লারমা পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃ-গোষ্ঠীর পক্ষে চুক্তিতে সই করার কোন যোগ্য লোক নহেন। কারণ তিনি জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন দেশ বিরোধী রাজাকার ও পাকিস্তানের মদদ পুষ্ট সন্ত্রাসী ও খুণী। বঙ্গবন্ধুর সাথে বৈইমানি করে দেশের ভিতর বিদ্রোহকারী একজন চিহিৃত অপরাধী।এছাড়া বিভিন্ন অপকৌশলে চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্রগ্রামের দেশের অন্যান্য অংশে বসবাস রত ১৭.৫ কোটি নাগরিকের জন্য পার্বত্য চট্রগ্রামে জমি ক্রয় ও ভূমি বন্দোবস্তি করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী হয়েছে। এসব অন্যায় নিষেধাজ্ঞা জারীর মাধ্যমে পার্বত্য চট্রগ্রামের চারিদিকে বাংগালীদের জন্য নিষেধাজ্ঞার এক প্রাচীর সৃষ্ঠি করে পার্বত্য চট্রগ্রামকে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের এলাকা হিসাবে ঘোষনা করা হয়েছে।
যুগ যুগ ধরে শান্তিকামী পাহাড়ী ও বাংগালীরা পার্বত্য চট্রগ্রামে একই সাথে সহ অবস্থানে বসবাস করে আসছিল সুখে শান্তিতে। দেশদ্রোহী বিভিন্ন কর্মকান্ডের জন্য জে এস এস ও ইউপিডিএফসহ সন্ত্রাসী সংগঠণগুলোর পক্ষে কোন জনসাধারণের সমর্থন নেই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ১৪/১৫ টি উপ-জাতির ৯৮% শতাংশ লোকই এই সাম্প্র্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মতামত প্রকাশ করেছে এবং তার পক্ষে নাই। জনসাধারণদের একমাত্র চাওয়া নিজেদের। ৭

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More