নিজের দেশেই অস্ট্রেলিয়া তাদের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি!

0

নিজের দেশেই অস্ট্রেলিয়া তাদের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি;বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী কে আদিবাসী উপাধি জন্য উঠে পড়ে লেগেছে কেন??

অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। আজ শনিবার অস্ট্রেলিয়ায় এই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় অর্ধেক ভোট গণনায় দেখা যায়, ৫৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ ‘না’ ও ৪২.৬৫ শতাংশ ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে।

অস্ট্রেলীয়রা যে স্থানীয় আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিপক্ষে, তার আভাস আগেই দিয়েছিল দেশটির গণমাধ্যমগুলো। অস্ট্রেলিয়ার সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি ও অন্য টেলিভিশনগুলোর পূর্বাভাস ছিল নিউ সাউথ ওয়েলস, তাসমানিয়া, কুইন্সল্যান্ড ও সাউথ অস্ট্রেলিয়া—এই চার রাজ্যের মানুষ দেশটির ১২২ বছরের পুরোনো সংবিধানে পরিবর্তন আনার বিপক্ষেই ভোট দেবেন।
গণভোট সফল হতে অস্ট্রেলিয়াজুড়ে হওয়া ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ার দরকার ছিল। পাশাপাশি ছয় রাজ্যের মধ্যে অন্তত চারটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ ভোট দরকার ছিল। পৃথক টাইম জোন হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে এখনো ভোট গ্রহণ চলছে। তবে এর আগেই স্পষ্ট হয়েছে গণভোটের ফল।
ভয়েস টু পার্লামেন্ট’ নামের একটি আদিবাসী পরিষদ গঠন করার মধ্য দিয়ে আদিবাসী ও টরেস স্ট্রেইট আইল্যান্ডের মানুষের সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রশ্নেই এই গণভোট আয়োজন করা হয়েছিল।
গণভোটে বিপক্ষে রায় আসায় হতাশ দীর্ঘদিন ধরে ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে প্রচার চালানো দেশটির আদিবাসী নেতা থমাস মায়ো। এবিসি নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। সংবিধানে আমাদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি কণ্ঠস্বর প্রয়োজন। কাঠামোগত পরিবর্তন চাই আমরা।’
অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যা আড়াই কোটির বেশি। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ আদিবাসী। প্রায় ৬০ হাজার বছর ধরে অঞ্চলটিতে বসবাস করে আসছেন তাঁরা। তবে এরপরও দেশটির সংবিধানে আদিবাসীদের উল্লেখ নেই। সামাজিক-আর্থিক দিক থেকেও তারা সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী।

যারা নিজের দেশেই আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয় না তারা কিভাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, সুইডেন ও নরওয়ে’র মতো বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মাঝে মাত্র ০.০৪% উপজাতিদের আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে সম্মতি প্রদান করে। তাদের এই বক্তব্য কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেটা নিয়ে যথেষ্ঠ প্রশ্ন থেকে যায়। উল্লেখ্য যে, ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৬১তম অধিবেশনে আদিবাসী বিষয়ক একটি ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। এ ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করলে ১৪৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, ৪টি দেশ বিপক্ষে, ১১টি দেশ ভোট দানে বিরত এবং ৩৪টি দেশ অনুপস্থিত থাকে। ভোট দানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া দেশগুলো হচ্ছে- অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। সর্বোপরি বলতে গেলে অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিচ্ছে না, সেখানে অস্ট্রেলিয়ায় কিভাবে আবার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বলে এটা প্রশ্ন থেকেই যায় ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More