পাহাড়ে যেন এক মগের মুল্লুক কায়েম চলছে: এভাবেই আর কত বাঙ্গালী হামলার শিকার হবে?

0

লেখক: হান্নান সরকার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মানিকছড়ি উপজেলার গিরি মৈত্রী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ) রাত আনুমানিক ১০.৩০ ঘটিকায় চলন্ত মোটরসাইকেলের উপর উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আব্দুল হামিদ (৩০) নামের এক বাঙ্গালী গুরুতর আঘাত প্রাপ্তহয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মানিকছড়ি কলেজ গেইট সংলগ্নে কয়েকজন উপজাতি বিচ্ছিন্নদাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে চাবি নিতে চাইলে চাবি না দেয়ায় তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক আঘাত করে। তার মাথার পেছনের অংশে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করার দাগ রয়েছে। যা গুরুতর। তার চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ প্রয়োজন। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ার কারণে চিকিৎসা ব্যয়বহন করতে অক্ষম।

আহত বাঙ্গালী মহামুনি দারুন নাজাত মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ আব্দুল হালিম। উপজাতি ধর্মগুরু বাঙ্গালী কর্তৃক রক্তাক্ত হলে সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিবাদ গড়ে উঠত এবং তথাকথিত সুশীল ও প্রগতিশীলরা বাঙ্গালীদের নিয়ে ঢালাওভাবে মন্তব্য করত। কিন্তু এখন রক্তাক্ত বাঙ্গালী ধর্মগুরু তাই সবাই নিশ্চুপ!

এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে HBF & PSS, সেসাথে জড়িত উপজাতি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার পূর্বক বিচারের মুখামুখি করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সবিনয়ে অনুরোধ জানিয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালীরা উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি কিংবা অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে তার বিচার হয়না। এসব ঘটনার পেছনে উপজাতি সন্ত্রাসীরা জড়িত থাকলে প্রশাসনকে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের আটক সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে উদাসীন দেখা যায়। প্রশাসনের উদাসীনতা এবং নতজানু নীতি পার্বত্য উপজাতি সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়েছে। নির্বিঘ্নে সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্র, বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনীর বিরোধীতা করে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে প্রশাসনের ছত্রছায়া। নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের হামলা, নির্যাতন, অপহরণ ও হত্যা করে যাচ্ছে। এখানে মনে হচ্ছে সবকিছুতেই মগের মুল্লুক কায়েম চলছে। জোর যার মুল্লুক তার৷ বাঙ্গালীরা সবকিছুতেই অবহেলিত এবং মর্যাদাহীন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালীরা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক হামলা কিংবা নির্যাতনের শিকার হলে তাদের খবরাখবর কেউ নেয় না! আর কত বাঙ্গালী হামলা কিংবা নির্যাতনের শিকার হলে প্রশাসনের টনক নড়বড়ে? এই ঘটনার সঙ্গে যদি কোন বাঙ্গালীর সম্পৃক্ততা থাকত প্রশাসন কী এভাবেই নীরবতা পালন করতো? নিঃসন্দেহে করত না।

আর এদিকে উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোও নীরবতা পালন করত না। তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করত এবং এই নিয়ে বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হত।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্বে জেএসএস সন্তু যেভাবে অরাজকতা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ঠিক একই কায়দায় চালাচ্ছে ইউপিডিএফ প্রসিতসহ অন্যান্য আঞ্চলিক সন্ত্রাসীরা।
সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে জেএসএস সন্তু চুক্তির শর্ত মোতাবেক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে পূর্বের ন্যায় অবৈধ অস্ত্র নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজকতা তৈরি করে অশান্তির বিজ বপন করছে। চুক্তির মৌলিক শর্ত ভঙ্গের জন্য সন্তু লারমার বিরুদ্ধে মামলাসহ প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এবং সেসাথে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা লালনকারী হিসেবে ইউপিডিএফ প্রসিত বিকাশ খীসাকে আইনের আওতায় আনা খুবি জরুরী। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী নির্যাতন ও খুন-গুমের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এসব বিশ্বাসঘাতক ও বৈরী আচরণকারী সন্ত্রাসী গডফাদারদের শাস্তির মুখামুখি করাই পার্বত্য সমস্যা সমাধান হবে বলে পার্বত্যবাসী মনে করে। এদেরকে অতিরঞ্জিত সুযোগ-সুবিধা এবং ছাড় দেওয়ার ফলে তারা রাষ্ট্রের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে অবৈধ অস্ত্র ও সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করছে। যা রাষ্ট্রদ্রোহীতার শামিল।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More